সৈয়দ জামিল আহমেদ শোবিজ তারকা নন, তাই তার পরিচিতি সর্বস্তরের মানুষের কাছে বেশ কম। তবে তিনি অনেক জনপ্রিয় তারকার শিক্ষক। তিনি একাধারে একজন নাট্যকার, নির্মাতা, প্রশিক্ষক, গবেষক এবং থিয়েটারবিষয়ক শিক্ষক। ঢাকার মঞ্চ নাটকের দর্শকের কাছে সমাদৃত নাম তিনি। ‘রিজওয়ান’, ‘মন্ত্রাস’, ‘জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা’র মতো সাড়া জাগানো নাটকের নির্দেশক সৈয়দ জামিল আহমেদ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সিংহভাগ অভিভাবক যখন চুপটি মেরে বসে ছিলেন সে সময় তিনি রাজপথে নেমে এসেছিলেন ছাত্রদের সাহস যোগাতে। তার মতাদর্শ দ্বারা প্রভাবিত হওয়া লোকের সংখ্যাও কম নয়। বরাবরই অচলায়তন ভেঙে ঘুণে ধরা সাংস্কৃতিক জগৎ তথা সমাজকে সংস্কারের কথা বলেছেন তিনি।
সেই সৈয়দ জামিল আহমেদই হলেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক। আজ সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্ব এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সৈয়দ জামিল আহমেদ।
তিনি ১৯৫৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৮ সালে তিনি দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন এবং ১৯৮৯ সালে ইংল্যান্ডের ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে থিয়েটার স্টাডিজে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ১৯৯৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি পান তিনি।
বাংলাদেশের মঞ্চ নাটকে অনন্য নাম সৈয়দ জামিল আহমেদ। বিষাদ সিন্ধু, বেহুলার ভাসান নির্দেশনা দিয়ে খ্যাতি কুড়িয়েছেন তিনি। সবশেষ ২০১৭ সালে টানা ১০ দিন ‘রিজওয়ান’ মঞ্চায়ন করে ঢাকার নাট্যাঙ্গনে রীতিমতো ঝড় তোলেন। এরপর প্রখ্যাত সাহিত্যিক শহীদুল জহিরের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস ‘জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা’ মঞ্চে আনেন তিনি। ‘জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা’ নাটকে তিনি মুক্তিযুদ্ধপূর্ব, মুক্তিযুদ্ধকালীন ও পরবর্তী সময়ের রাজনৈতিক বাস্তবতার এক উত্তরাধুনিক সংকট উপস্থাপন করেছেন।