জনপ্রিয় অভিনেত্রী হোমায়রা হিমুর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশ। গত ৯ সেপ্টেম্বর উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই সাব্বির হোসেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হুদার আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন। এতে আসামি করা হয়েছে হিমুর ‘বয়ফ্রেন্ড’ জিয়াউদ্দিন রুফিকে।
চার্জশিটে বলা হয়, হোমায়রা হিমু থাকতেন রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার ১০ নম্বর সেক্টরে। দুই দশকের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ছিল নানান চড়াই-উৎরাই। বিয়ে করলেও সংসার ঠিকঠাক করা হয়ে ওঠেনি। একপর্যায়ে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়। হিমুর ঘনিষ্ঠজন, কথিত প্রেমিক বা বয়ফ্রেন্ড ছিলেন মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ওরফে রুফি (৩৬) নামের এক ব্যক্তি। আত্মহত্যার ছয় মাস আগে থেকে হিমুর বাসায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল তার। এমনকি ওই বাসায় মাঝে মধ্যে রাত্রিযাপনও করতেন তিনি।
সম্পর্কের একপর্যায়ে হিমু তার বয়ফ্রেন্ড রুফির মোবাইল ফোন নম্বর ও বিগো আইডি ব্লক করে দেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা ও মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। রুফি ভিকটিম হিমুকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেন। পরে রাগে ও অভিমানে গত বছরের ২ নভেম্বর হিমু বাথরুমে ঢুকে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
এ ঘটনায় ২ নভেম্বর রাতেই হিমুকে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে তার মামা নাহিদ আক্তার বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা করেন।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই সাব্বির হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ভিকটিম হোমায়রা হিমুকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় তার বয়ফ্রেন্ড জিয়াউদ্দিন ওরফে রুফির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছি। তদন্তে আসামির বিরুদ্ধে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় দণ্ডিবিধির ৩০৬ ধারায় এ চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।
লক্ষ্মীপুরের মেয়ে হোমায়রা হিমু মঞ্চ নাটকের মাধ্যমে অভিনয় জগতে পা রাখেন। ২০০৬ সালে টেলিভিশন নাটক ‘ছায়াবীথি’তে প্রথম অভিনয় করেন। তারপর ‘বাড়ি বাড়ি সারি সারি’, ‘হাউজফুল’, ‘গুলশান এভিনিউ’সহ অনেক জনপ্রিয় নাটক উপহার দিয়েছেন তিনি।
ছোটপর্দার পাশাপাশি হিমু নাম লিখিয়েছেন চলচ্চিত্রেও। ২০১১ সালে ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ সিনেমার মাধ্যমে এই ভূবনে তার অভিষেক হয়। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এ চলচ্চিত্রে ‘অরু’ চরিত্রে অভিনয় করে দারুণ প্রশংসা কুড়ান তিনি।