ছাত্র আন্দোলনের ফলে দেশে তৈরি হওয়া স্থবিরতার প্রভাব অন্যান্য সেক্টরের মতো শিল্প সাহিত্যেও পড়েছে। তবে সেই স্থবিরতা কাটিয়ে চেষ্টা করছে সবাই। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি নন্দন মঞ্চে আয়োজন করে লালন উৎসব। এবার প্রতিষ্ঠানটি উদ্যোগ নিয়েছে হারিয়ে যাওয়া বাংলার ঐতিহ্য ‘যাত্রা শিল্প’কে চাঙ্গা করার ।
‘যদি তুমি ভয় পাও তবে তুমি শেষ, যদি তুমি রুখে দাঁড়াও তবে তুমি বাংলাদেশ’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গত ১ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে যাত্রা উৎসব। সাত দিনব্যাপী উৎসবটি চলবে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত। যাত্রাপালা অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
বাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্য যাত্রাপালা। আমাদের শিক্ষা,সংস্কৃতি, চিন্তা, মূল্যবোধ,দর্শনকে ধারণ করেই যাত্রাপালার বিস্তৃত ইতিহাস যা কথা বলে অন্যায়ের বিরুদ্ধে, কথা বলে সকল শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে এবং কথা বলে গণমানুষের সংস্কৃতির পক্ষে। এই উৎসবে সমাজের সকল ধারার মানুষের আগমনকে সবসময়ই ইতিবাচকভাবে দেখছে আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।
এই যাত্রা উৎসবকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে তালিকাভুক্ত ৭টি যাত্রাদল এসেছে ঢাকায়। সাত দিনে সাতটি অর্থাৎ প্রত্যেক দল ১টি করে যাত্রাপালা পরিবেশন করছে উৎসবে।
গত ১ নভেম্বর সন্ধ্যায় যাত্রা উৎসেবর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইসরাফিল মজুমদার, বিশেষ অতিথি যাত্রাশিল্পী অনিমা দে এবং উদ্বোধনী বক্তব্য প্রদান করবেন নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের পরিচালক ফয়েজ জাহির।
সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান, নাট্যনির্দেশক, প্রখ্যাত ডিজাইনার, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ।
সাত দিনব্যাপী আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী সন্ধ্যায় পরিবেশিত হয় সুরুভী অপেরার ‘নিহত গোলাপ’। দ্বিতীয় দিন পরিবেশিত হয় নিউ শামীম নাট্য সংস্থার পালা ‘আনার কলি’।
তৃতীয় দিনে ছিলো বঙ্গবাণী অপেরার ‘মেঘে ঢাকা তারা’। আজ চতুর্থ দিনে থাকছে নর-নারায়ণ অপেরার ‘লালন ফকির’।
আয়োজনটির পঞ্চম দিনে থাকবে বন্ধু অপেরার যাত্রা ‘আপন দুলাল’, ষষ্ঠ দিনে দেখা যাবে শারমিন অপেরার পালা ‘ফুলন দেবী’ এবং সমাপনী দিনে দেখা যাবে যাত্রাবন্ধু অপেরার ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’।