পৃথিবী জুড়ে যেমন ক্রিকেট খেলার পরিবর্তন হয়েছে, তেমনি রূপান্তর হচ্ছে সিনেমার। বর্তমানে স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি দেখতে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে মানুষের মধ্যে। সেই আগ্রহ কলকাতাবাসীর মধ্যেও লক্ষ্যনীয়। সে কারণে কলকাতায় প্রথমবার প্রদর্শিত হলো সব্যসাচী চক্রবর্তী অভিনীত দুটি শর্টফিল্ম। এগুলো হলো- ‘রিটেন বাই’ (১৫ মিনিট ৪০ সেকেন্ড) ও ‘সবুজ চশমা’ (২৫ মিনিট)।
দুই তরুণ বাঙালি পরিচালক, বয়সে নবীণ হলেও আন্তর্জাতিক আঙ্গিনায় এরইমধ্যে তাদের ছবি দুটি বেশ প্রশংসা পেয়েছে।
‘রিটেন বাই’ লস অ্যাঞ্জেলসে প্রবাসী বাঙালি কন্যা কঙ্কনা চক্রবর্তীর পরিচালনা এবং ‘সবুজ চশমা’, কলকাতার ছেলে ইন্দ্রনিল নাগের পরিচালিত। এই দুটি শর্টফিল্মেই অভিনয় করেছেন সব্যসাচী চক্রবর্তী।
সম্প্রতি কলকাতায় ছবি দুটির বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিলেন নির্মাতারা। অনুষ্ঠানে সব্যসাচী চক্রবর্তী বলেন, আমি এমনিতে কাজ খুব কমই করছি। কিন্তু কঙ্গনা যখন এই ছবিটি করল তার আগে অবশ্য ইন্দ্রনীল তার ফিল্মটি তৈরি করে ফেলেছিল। আমার পছন্দ হলো পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলে আর কাজের জন্য রাজি হলাম। আমি মনে করি যারা সিরিয়াসলি এ ধরনের কাজ করতে আগ্রহী তাদের আগ্রহটা আরও বাড়ানো উচিত। এখানে আমি যে কাজ করেছি তাতে আমার থেকে বড় গুরুত্ব পরিচালকের ভাবনা। ভবিষ্যতে এই শর্ট ফিল্মগুলো আস্তে আস্তে বিগ বাজেট ফিল্মে জায়গা নেবে। এখন শর্ট ফিল্ম দেখানোর বিভিন্ন মাধ্যম সামনে এসেছে। বিভিন্ন সংস্থা এগিয়ে এসে তাদের নিজেদের প্লাটফর্ম এই শর্ট ফিল্মগুলোকে দেখানোর আগ্রহ দেখাচ্ছে। এছাড়া সারা ভারতবর্ষে অনেকগুলি শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল হয়, আর এই ‘রিটেন বাই’ ইতিমধ্যেই অনেকগুলো পুরস্কার পেয়েছে। কিন্তু এখন হয়তো শর্ট ফিল্ম সংখ্যায় কম হয়, কিন্তু আগামীতে আরও বাড়বে।
‘সবুজ চশমা’ নিয়ে পরিচালক ইন্দ্রনীল নাগ বলেন, গল্পটা ১৯৬৮ এর কিন্তু আমি যখন ছবিটি দেখাচ্ছি তখন সেটা ২০০৯ সালকে তুলে ধরছি। এখানে গল্পটা একজন প্রফেসরকে কেন্দ্র করে, যিনি একটি সবুজ পাথর আবিষ্কার করে ফেলেন এবং সেই পাথর থেকে তিনি একটি লেন্স তৈরি করেন। কিন্তু তাকে ভারতীয় বৈজ্ঞানিক সংস্থা এবং তার কলেজ সবাই দূরে সরিয়ে রাখে। কারণ তিনি দাবি করেন এই চশমা দিয়ে নাকি ভূত দেখা যায়। এরপর তাকে পাগল প্রমাণ করে কলেজ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর তিনি একদিন একটি স্টেশনে একটি ছেলের সঙ্গে আলাপ হয় এবং গল্প এগিয়ে যেতে থাকে। এটি একটি সায়েন্স ফিকশন ছবি।
ছবিটির শুটিং হয়েছে পুরুলিয়া, ঝারগ্রাম, ঝাড়খন্ড-পুরুলিয়া বর্ডার। সব্যসাচী চক্রবর্তী ছাড়াও এই ছবিতে আরও ২৯ জন কাজ করেছেন। ‘সবুজ চশমা’য় মিউজিক দিয়েছেন রুপম ইসলাম, গান গেয়েছেন শিলাজিৎ দা।
অপর পরিচালক কঙ্কণা চক্রবর্তী জানালেন, এই দুটি শর্ট ফিল্মেই কমন লিংক হলেন সব্যসাচী চক্রবর্তী এবং এই ইন্টারন্যাশনাল শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভাল যথেষ্ট প্রশংসা পেয়েছে। ধীরে ধীরে পৃথিবীতে শর্টফিল্ম গুরুত্ব পাচ্ছে।