চলতি বছর কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সুবর্ণ জয়ন্তী। ফলে স্বাভাবিকভাবেই উৎসবের প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে জোর কদমে। কিন্তু তার আগেই যেন ছন্দপতন হচ্ছে চলচ্চিত্র উৎসবের। গত বছর এই উৎসবের চেয়ারম্যান পদে ছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। এবার ওই পদে রাজ চক্রবর্তীর নাম সামনে এসেছে।
প্রসেনজিতের বদলে কেন রাজ? এখন এমনটাই প্রশ্ন টলিউডে।
জানা গেছে, প্রসেনজিৎ নাকি ব্যক্তিগত কাজের চাপে উৎসবের একাধিক মিটিংয়ে থাকতে পারেননি। এ কারণেই উৎসব কমিটি তার পরিবর্তে রাজকে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে প্রসেনজিৎ বলেন, ‘আমাকে এ ব্যাপারে কিছুই জানানো হয়নি।’
তবে চলচ্চিত্র উৎসবের বিশেষ উপদেষ্টা কমিটিতে মাধবী মুখোপাধ্যায় বলেন, সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়, গৌতম ঘোষ, সন্দীপ রায়, অপর্ণা সেন, রঞ্জিত মল্লিক, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, অরিন্দম শীলের সঙ্গে রয়েছে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের নামও। উৎসব সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য এই বিশেষ উপদেষ্টা কমিটিই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। তবে প্রসেনজিৎ নাকি চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, নিজস্ব কাজের জন্য সে এই বছর কোনোভাবেই উপদেষ্টা কমিটিতে থাকতে পারছেন না। সত্যিই কি ওইসময় শহরের বাইরে থাকবেন? নাকি চেয়ারম্যান পদ চলে যাওয়ায় অভিমান?
অভিমানী প্রসেনজিতের জবাব, ‘যদি উৎসব কর্তৃপক্ষ মনে করেন আমি সময়ের অভাবে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সামলাতে অপারগ, তাহলে কীভাবে আমি উপদেষ্টা কমিটির হয়ে কাজ করতে পারব! আমার ব্যস্ততা তো কিছু কম বা বেশি হচ্ছে না। ছবি নিয়ে কমিটমেন্ট যেমন থাকবে, তেমনই ছেলেকে (মিশুক) নিয়ে বিদেশে যাওয়াও থাকবে। তাই আমি চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছি এ বছর আমার পক্ষে থাকা সম্ভব নয়। তবে কলকাতা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের প্রতি আমার সমর্থন সবসময় থাকবে।’
অন্যদিকে রাজ চক্রবর্তী স্বভাবতই খুশি। তিনি জানান, ‘এটি আমার কাছে যথেষ্ট সম্মানের বিষয়। প্রত্যেকবার কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে ছবি দেখি। আর এবার তো গুরু দায়িত্ব! কী করতে হবে, কীভাবে করতে হবে সেটি বড়দের থেকে ধীরে ধীরে শিখব। সবাইকে নিয়ে উৎসব যাতে সফল হয় সেই চেষ্টাই করব। আশা করি আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আমি তা পালন করতে পারব।’
কিন্তু এই নতুন পদ পাওয়ায় রাজের সঙ্গে প্রসেনজিতের সম্পর্কে কি চিড় ধরাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে রাজ বলেন, ‘একদম বাজে কথা। কারা এসব রটাচ্ছে আমি জানি না। আমাদের সম্পর্ক যথেষ্ট ভালো। বুম্বাদা ছাড়াও ইন্ডাস্ট্রির অনকেই উৎসবের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন। একটি বিশাল টিম কাজ করে। সেখানে আমি একটা পদ পেয়েছি মাত্র। কিন্তু আমি জানি আমাকে সবাইকে নিয়েই এগতে হবে।’
এবছর উৎসবের মুখ্য উপদেষ্টার পদে রয়েছেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও কো চেয়ারম্যান মন্ত্রী তথা গায়ক ইন্দ্রনীল সেন। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে সম্ভবত পরিস্থিতি বুঝেই মুখ খোলেনি তারা। শাসক দল পন্থী রাজ, অপরদিকে প্রকাশ্যে কোনো দল সমর্থন করে না প্রসেনজিৎ। ফলে এখন দেখার কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সুবর্ণ জয়ন্তীর আগে পানি কতদূর গড়ায়!