মৃত্যুর ১২৮ বছর পর বাংলার প্রথম আকাশচারীকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে স্বল্প দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র ‘ইন সার্চ অব জিনেট ভানতাসেল’। বাংলায় প্রথম বেলুন আকাশচারী জিনেট ভানতাসেল ছিলেন একজন মার্কিন তরুণী। তৎকালীন ঢাকার নবাবদের আমন্ত্রণে তিনি আমেরিকা থেকে ঢাকায় আসেন।
রোববার (৮ মার্চ) রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে প্রদর্শিত হয় এ চলচ্চিত্র।
গোটা বিশ্বের নারীদের প্রতি সম্মান, শ্রদ্ধা ও তাদের প্রতি সংহতি জানাতে ‘কোয়েস্ট... এ হেরিটেজ জার্নি অব বাংলাদেশ’ আয়োজন করে ‘বাংলায় প্রথম বেলুন আকাশচারীর গল্প কথা’ শিরোনামে এ প্রদর্শনী।
আকাশচারী মার্কিন নারী জিনেট ভানতাসেল বাংলাদেশে আসেন ১৮৯২ সালের ১৬ মার্চ। ঢাকার নবাব আহসান উল্লাহর আমন্ত্রণে তিনি ঢাকায় আসেন। বুড়িগঙ্গা নদীর ওপর থেকে বেলুনে চড়ে জলরাশি পাড়ি দিতে আকাশে উড়েন জিনেট ভানতাসেল। দুঃসাহসিক এই অভিযান নিজ চোখে দেখতে নদীর দুই পাড়ে ভিড় জমান হাজারো মানুষ। আর নবাবরা সেটি দেখেন আহসান মঞ্জিলের ছাদে বসে।
তবে ভানতাসেলের সেই দুঃসাহসিক অভিযানের সমাপ্তি ঘটে দুর্ঘটনার মধ্য দিয়ে। নদী পাড়ি দিয়ে আহসান মঞ্জিলের ছাদে নামার কথা ছিল তার। কিন্তু বৈরি আবহাওয়ার কারণে আহসান মঞ্জিলের ছাদে নামা সম্ভব হয়নি। এ অভিযানে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মারা যান তিনি।
এই চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছে এলিজা বিনতে এলাহী। বিশ্ব ও বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যগুলো ঘুরে দেখছেন তিনি। ঐতিহ্যবাহী প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনাগুলো পরিদর্শন করছেন। পাশাপাশি সেগুলোর বিষয়ে সবাইকে জানাতে ভ্রমণ চলচ্চিত্র বা ট্রাভেল ভিডিও নির্মাণ করছেন।
আলাপচারিতায় তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, বাংলাদেশে যাদের নিয়ে কথা বলা কম হয়েছে, যাদের নিয়ে কাজ কম হয়েছে। তাদেরকে তুলে ধরতে চাই। আমাদের দেশের মানুষকে জানানো, পাশাপাশি আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের দেশকে তুলে ধরতে চাই। আলোচনায় না আসা ১০ জন নারীকে নিয়ে একটি সিরিজ করার পরিকল্পনা নিয়েছি। তার মধ্যে প্রথম এটি (ইন সার্চ অব জিনেট ভানতাসেল)। ধাপে ধাপে কাজগুলো করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
এই ধরণের চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য এলিজা বিনতে এলাহীকে সাধুবাদ জানিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, এটি একটি মৌলিক গবেষণা হয়েছে। যদি আপনি কখনো উন্মাদ না হন, উন্মাদনায় আসক্ত না হন, তাহলে আপনি কখনোই বড় মানুষ হতে পারবেন না। কখনোই সমাজকে কিছু দিতে পারবেন না।
নারী দিবসের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি যে একজন নারী এটা মনে করিয়ে দেয়ার জন্য কি বছরে একটি দিন যথেষ্ট? নাকি ৩৬৫ দিন নারী দিবস হওয়া উচিত? এই যে এত এত দিবস এর মধ্যে ভালো মানুষ হওয়া দিবস কোথায়? এত এত দিবসের মধ্যে ভালো মানুষ হওয়ার প্রতিজ্ঞা করার দিবস কোথায়? মৌলিক গবেষণার জায়গাটা কেন নেই? মৌলিক গবেষণা দিবসটা কোথায়?