অরণ্য স্নিগ্ধতায় সিংহ বানর

, ফিচার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট | 2023-08-28 11:55:57

চির শুদ্ধতার নাম অরণ্য, বন প্রকৃতি। এগুলোতে ভ্রমণ করা মানেই নিজের অজানা লালিত টেনশন, গোপন ক্ষত, অনাকাঙ্ক্ষিত হতাশা সবকিছু দূর করার দারুণ প্রয়াস। তাই বনের কাছাকাছি আসতেই হবে। বনকে ভালোবাসতেই হবে।

শহুরে মানুষের অবস্থা আরো করুণ! বিপর্যস্ত। কর্মব্যস্ততায় ডুবে থাকতে থাকতে অনেকেই ভুলে গেছেন প্রাকৃতিক শুদ্ধতার মাঝে নিজেকে সতেজ করে খুঁজে পাওয়ার অসম্ভব সুন্দর মুহূর্তটুকুকে উপভোগ করার কথা। নানাভাবে নানান গবেষণায় আজ প্রমাণিত- মানুষের অনাকাঙ্ক্ষিত হতাশা, ক্ষোভ দূর করে বন প্রান্তর, সবুজ বনভূমি।

কিন্তু মানুষ আজ বিপরীতমুখী! বনে ভ্রমণ করাতো দূরের কথা! বনকে বাঁচিয়ে রাখার ইচ্ছেটুকুও যেন মরে গেছে! মানুষ নিজের লোভ দ্বারা পরিচালিত হয়ে যে যার মতো করে ধ্বংস করেছে প্রকৃতি। উজাড় করছে বন্য প্রাণীদের নির্ভীক অস্তিত্ব।

‘আধঘণ্টা’ কম নয় কিন্তু! মাত্র ত্রিশ মিনিটেই শুদ্ধতা ফিরে পাওয়া যায় শুদ্ধতা। তাই মাত্র আধঘণ্টার লোভেই ফিরে আসুন না একবার বন প্রান্তরে। আপনার শহুরে জীবন প্রণালি থেকে বের হয়ে একটু প্রকৃতি ঘেষা প্রাঙ্গণে।

পাতার আড়াল থেকে হঠাৎ দৃশ্যমান। ছবি: বার্তা২৪

নির্দিষ্ট সময় বের করে বন ভ্রমণে অগত্যা যেতেই হয়। কারণ, সেখানে যে চিরসবুজ প্রাণের অস্তিত্বগুলো খুঁজে পাওয়া যায়। নিজের মতো করে কাটানো যায় নিজের কিছুটা সময়।

একটা গাছের ডাল হঠাৎ নেড়ে ওঠে! অবশ্য তখনও কিছু দেখা যায় না। শুধুই নেড়ে ওঠার কম্পন। হঠাৎ পাতাদের ঘন আড়াল থেকে চোখ মেলে চায় ‘সিংহ বানর’। এ প্রজাতির বানরটির অবশ্য আরো নাম রয়েছে। যেমন- কুলু বানর, ছোট লেজি বানর। এর ইংরেজি নাম Northern Pig-Tailed Macaque এবং বৈজ্ঞানিক নাম Macaca Leonina.

সিংহ বানর মূলত ছোট লেজের বৃক্ষচারী প্রাণী। তবে সীমিত আকারে এরা সমতলভূমিতেও বিচরণ করে থাকে। এদের লেজ দেখতে অনেকটা শুকরের লেজের মতো। এরা বৃক্ষশাখে বিচরণের সময় লেজ উল্টিয়ে পিঠের দিকে খাড়া করে রাখে। এদের দেহ হালকা বাদামি রঙের এবং পিঠের রং সোনালী থেকে হালকা বাদামি।

বৃক্ষশাখে শাখামৃগের পরিভ্রমণ। ছবি: বার্তা২৪

সবুজ বনের এই প্রাণীটির খাদ্য তালিকায় রয়েছে- ফলমূল, পাতা এবং বিভিন্ন কীট-পতঙ্গ। গাছের উঁচু ডাল, বাঁশঝাড়, কুঞ্জ বন, মিশ্র পাতাঝড়া বন এবং চির সবুজ বনে দল বেঁধে বা একাকী বিচরণ করে এরা।

ইতিমধ্যে সময় প্রায় আধঘণ্টার ঘরে পৌঁছতে শুরু করেছে। ত্রিশ মিনিটের মধ্যে পঁচিশ মিনিটই চোখ আটকে ছিল বানরটির নানা প্রকার দুষ্টুমির দিকে! বাধ্যগত সাথীদের উদ্দেশ্যে ‘আলফামেইল’ (দলের একমাত্র ক্ষমতাধর পুরুষ বানর) এর হুংকার পরিবেশকে হঠাৎ গম্ভীর করে তুলে।

এ দৃশ্য প্রাণের গভীরে স্বস্তি ছড়ায়। দীর্ঘ যাপিত জীবনের টেনশন, হতাশা, ক্ষোভ, চাপা বেদনাসহ আরো অনেক ঋণাত্মক অনুভূতিগুলো হঠাৎই তরতাজা হয়ে উঠে। তারা নিজে বেঁচে প্রতিটি মানুষের অবয়বকে বেঁচে থাকার প্রেরণা যোগায়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর