নতুন উদ্ভাবিত জাত, দেখতে ও স্বাদে দেশি মুরগির মতই

, ফিচার

নিউজ ডেস্ক, বার্তা ২৪ | 2023-09-01 23:16:27

দেখতে দেশীয় জাতের মুরগির মতই। এর শারীরিক গঠন, ঠোট ও ঝুঁটি দেশি মুরগির সাথে মিলে যাবে। এর পালকও হয় অনেক রঙয়ের। এর স্বাদ এবং মাংসের গুণাগুণও দেশি মুরগির মতই। বাংলাদেশে প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউটের উদ্ভাবিত নতুন দেশীয় জাতের এই মুরগির নাম দেয়া হয়েছে 'মাল্টি কালার টেবিল চিকেন'।

প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউট ২০১৪ সালে প্রথম নতুন মুরগির এ জাত নিয়ে গবেষণা শুরু করে। ২০১৮ সালে গবেষণাগারে সাফল্যের পর মাঠ পর্যায়ে পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন শুরু করা হয়। প্রাথমিক অবস্থায় খুলনা, বরিশাল এবং পাবনায় পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন ও বাজারজাত করা হয়েছে।

প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউটের পোল্ট্রি উৎপাদন বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শাকিলা ফারুককে উদ্ধৃত করে বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন এই জাত মূলত মাংসের জাত। এ মুরগি মূলত দেশে মাংসের চাহিদা পূরণের উদ্দেশ্য নিয়ে উদ্ভাবন করা হয়েছে। মাল্টি কালার টেবিল চিকেন খুব দ্রুত বাড়ে। আট সপ্তাহের মধ্যে এর ওজন সাড়ে নয়শো গ্রাম থেকে এক কেজির মত ওজন হয়।

তিনি বলেন, নতুন জাত উদ্ভাবনে বিদেশি জাত এবং দেশীয় কয়েক জাতের মুরগির জার্মপ্লাজম মিলিয়ে করা হয়েছে। মাল্টি কালার টেবিল চিকেন বাংলাদেশের আবহাওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ মুরগির মৃত্যু হার অনেক কম।

প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউটের শাকিলা ফারুক জানান, এই মুহূর্তে চারটি সরকারি এবং দুইটি বেসরকারি খামারে নতুন জাতের মুরগি উৎপাদন করা হচ্ছে। এর মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করে পরীক্ষামূলকভাবে বাজারজাত করার জন্য আফতাব বহুমুখী ফার্মসের সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউট। এই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউট এখনো যৌথ গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশে গত এক দশকে মুরগির চাহিদা এবং ব্যবহার অনেকগুন বেড়েছে। এর মধ্যে ব্রয়লার মুরগি যেমন রয়েছে, তেমনি দেশি মুরগি, সোনালী মুরগি, যা পাকিস্তানি মুরগি নামেও পরিচিত এগুলো বেশ জনপ্রিয়।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রয়লার মুরগি ২৮-৩২ দিনে খাওয়ার উপযোগী হয়, অর্থাৎ ওই সময়ের মধ্যে ব্রয়লার মুরগির ওজন এক থেকে দেড় কেজি হয়। সোনালি মুরগির এক কেজি ওজনে পৌঁছাতে সময় লাগে ৭০-৮০ দিন। কিন্তু মাল্টি কালার টেবিল চিকেন বাজারজাত করতে অন্তত আট সপ্তাহ সময় প্রয়োজন হবে।

ব্রয়লার মুরগির মাংস ও হাড় নরম হয়, কিন্তু মাল্টি কালার টেবিল চিকেনের মাংস ও হাড় দেশি মুরগির মত শক্ত। ব্রয়লার মুরগি পালনে বড় জায়গা, নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রা এবং আলো-বাতাসের দরকার হয়, কিন্তু এ মুরগি পালনের ক্ষেত্রে দেশি জাতের মুরগির মত খোলা জায়গায় পালন করা যায়।

প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউট বলছে, এই মুরগি লালনপালন সহজ, ফলে প্রান্তিক খামারীদের জন্য এটি পালন সহজ হবে এবং ফলে আর্থিকভাবে লাভবান হবার সুযোগ বেশি থাকবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর