শান্তির পৃথিবীতে অশান্তির ছায়া দূর করতেই হবে

, ফিচার

কনক জ্যোতি, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 20:49:30

শান্তি মানুষের প্রধান কাম্য বিষয় হলেও সেই শান্তির অভাব মাঝে মাঝে দেখা দেয় স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর উদ্দেশ্যমূলক পদক্ষেপ ও আচরণের কারণে। তখন শান্তির পৃথিবীতে অশান্তির ছায়া নেমে আসে। মানবিক, বিবেকসম্পন্ন মানুষ তখন হাতে হাত রেখে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়। ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, অঞ্চল নির্বিশেষে শান্তির পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করাই মানুষের চিরায়ত মানবিক অঙ্গীকার। 

বিশ্বের ও আমাদের দেশে প্রায়ই শান্তি বিঘ্নিত হয়ে অমানবিক ও মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে অসৎ গোষ্ঠীর মতলববাজির কারণে। আশার কথা হলো, অশান্তি সৃষ্টিকারী ষড়যন্ত্রকারীদের আইন, সমাজ ও মানুষ পছন্দ করে না। অচিরেই তাদেরকে চিহ্নিত করা ও আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়।  

যদিও অশান্তি সৃষ্টিকারীদের কারণে পরিস্থিতি সাময়িকভাবে জটিল, উত্তেজক ও ঘোলাটে হয়, তথাপি সেই সঙ্কুল পরিস্থিতিতেও দেশ-সমাজ-মানুষ শান্তির কথা বলে ও শান্তির পক্ষে থাকে। মুষ্টিমেয় ষড়যন্ত্রকারীরা কখনোও সফল হয় না মানুষ ও মানবতার বিরুদ্ধে। জয় হয় শান্তির, মানুষের, মানবতার।

ধর্মের নামে, রাজনীতির নামে, স্বার্থের নামে স্বল্প সংখ্যক মানুষ বিভিন্ন সময়ে নানা দেশে উগ্রতা ও হিংসা প্রদর্শন করে। তাদের অন্তরে, নীতিতে ও পরিকল্পনায় থাকে শত্রুতা, প্রতিহিংসা ও বিদ্বেষভাব। সভ্যতার ইতিহাসে এরা সব সময়ই পশুর সঙ্গে আস্তাবলে স্থান পেয়েছে। মানুষের সমাজে এদের জায়গা হয় না। কারণ মানুষ শান্তি চায়। হাঙ্গামা, সন্ত্রাস, প্রতিহিংসা, ধ্বংস, রক্ত, তাণ্ডব মানুষ চায় না। মানুষ চায়, শান্তির পৃথিবীতে অশান্তির ছায়া দূর হোক।

ফলে যে বা যারা শান্তি বিনষ্ট করে, উস্কানি ও উত্তেজনা ছড়ায়, অপরের অধিকার, মর্যাদা ও নিরাপত্তা বিনষ্ট করে, তাদেরকে কঠোরভাবে দমন ও পরিত্যাগ করা অবশ্য কর্তব্য। শান্তি ও সম্প্রীতির বিরুদ্ধে যে বা যারা কাজ করবে, ধর্ম, বর্ণ, রাজনৈতিক পরিচয় ভুলে তাদেরকে আইনের কঠোর বিধানের আওতায় এনে শাস্তি দিতে হবে এবং সামাজিকভাবে সম্মিলিত শক্তিতে প্রতিহত করতে হবে। শান্তির পৃথিবীতে অশান্তির ছায়া দূর করতে যা যা দরকার, সবই করতে হবে ব্যক্তি, সমাজ ও স্ব স্ব রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে।

এটাই মানুষ, সমাজ ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার দায়িত্ব যে, সর্বাবস্থায় শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। অশান্তি সৃষ্টিকারী অপরাধীদের নির্মূল করতে হবে। কারণ, পৃথিবীর কোথাও এমন কোনও প্রকৃত মানুষ নেই, যিনি অশান্তি, হিংসা, সন্ত্রাস, সহিংসতা, নাশকতা, বর্বরতা, হানাহানি, উগ্রতা, দ্বন্দ্ব-কলহ, সংঘাত-সংঘর্ষ, ঝগড়া-বিবাদ, যুদ্ধবিগ্রহ ও হত্যাযজ্ঞকে উপকারী বা উত্তম মনে করেন বা সমর্থন করেন।

তথাপি ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, মানবতার ঐক্য, সামাজিক সংহতি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অপরিহার্য হওয়া সত্ত্বেও ধর্ম-কর্ম ভুলে বিপথগামী লোকেরা বিভিন্ন দলমত, উপদল ও গোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে বিচ্ছিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করেই চলে। যার কারণে, দ্বন্দ্ব-কলহ, ঝগড়া-বিবাদ, সংঘাত-সংঘর্ষ, অন্তঃকোন্দলের নৈরাজ্যময় ও বিশৃঙ্খলাপূর্ণ ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ অব্যাহত থাকে।

ফলে মানুষের পারস্পরিক ঐক্য, সামাজিক সংহতি ও শান্তি-সম্প্রীতি বিনষ্ট হওয়ার বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হয়। হিংসা, অশান্তি, মতবিরোধ, বিভেদ-বিভক্তি, তিক্ততা-রেষারেষি, হানাহানি, হিংসা-বিদ্বেষ, শত্রুতা-ঘৃণা প্রভৃতি দূরীভূতের মাধ্যমে ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনে সুসম্পর্ক ও সম্প্রীতি স্থাপনের জন্য পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা ও সহযোগিতা বজায় রাখতে হয়।

শান্তির পৃথিবীতে অশান্তির ছায়া দূর করতে মানুষ, সমাজ ও রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে হাত ধরাধরি করে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা ও সহযোগিতার পথে চলছে হবে এবং হিংসা ও বিভেদকারীদের মূলোৎপাটন করতে হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর