হাত বাড়িয়ে বরফ ছোঁয়া কিংবা অবিশ্রান্ত ঢেউয়ে হেঁটে চলা, সবই পাবেন এখানে। সাগর, বালু আর তুষার- একই রেখায় সাজানো!
সমুদ্র নাকি পাহাড়? কোনটা ভালোবাসেন? আপনার উত্তর যদি দুটোর পক্ষেই হয় তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য। অবিশ্রান্ত মূর্ছনায় আছড়ে পড়া ঢেউয়ে হেঁটে বেড়ানো আর হাত বাড়িয়ে বরফ ছোঁয়া! আপনি চাইলে এই দুটোই একসঙ্গে পেতে পারেন।
সমুদ্র সৈকত আর তুষার; হিমেল হাওয়া আর শৈত্য; বালি আর বরফ! আক্ষরিক অর্থেই অসাধারণ এক বিচ। উত্তাল ঢেউ আছড়ে পড়ছে একপাশে। হুংকার তুলে দলবদ্ধ জলরাশি এগিয়ে আসছে বাতাসের সাথে তাল মিলিয়ে। শো শো শব্দ তুলে বাতাসও জানান দিচ্ছে, তারা এসেছে তীরহারা বহু পথ পেরিয়ে। দু’চোখে কেবল অগণিত জলকণায় তৈরি বিশালাকার পৃথিবী প্রলেপ দেখা যায়। অন্যপাশে সেই জলাধারের ভিন্ন রূপ। সারি সারি কণা মিলে তৈরি করেছে বিশাল পাহাড়। তবে তা, পানি থেকে তৈরি বরফের। মাঝে যেন সাধারণ কোনো বালুময় পথ।
যারা এই ধরণের পরিবেশই পছন্দ করেন তাদের জন্য স্যান’ইন কাইগান জিওপার্ক এক স্বর্গরাজ্য।
বলছিলাম জাপানের সবচেয়ে উত্তরের দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ হোক্কাইডো সমুদ্র সৈকতের কথা। সম্প্রতি এই বীচের একটি চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যেখানে এই সৈকতটিকে আলাদা করে তুষার, বালি এবং সমুদ্রের একই স্থানে একত্রিত হওয়ার অনন্য দৃশ্য হিসেবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। খবর এনডিটিভি।
গণমাধ্যমটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরেই বিচের এই ছবিটি নজর কেড়েছে নেটপাড়ার।
ছবিতে দেখা গিয়েছে, একজন ওই বিচে হেঁটে বেড়াচ্ছেন। তাঁর একদিকে বালি আর অন্যদিকে বরফ!
অনন্য সভ্যতা এবং জীবনযাপনের ধরণের জন্য জাপান প্রসিদ্ধ। তবে অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের নির্দশনও রয়েছে এই দেশে। বিখ্যাত হোক্কাইডো সমুদ্র সৈকত প্রতিবছরই আলোচনায় আসে। কারণ, প্রতি বছরের শুরুতে এখানে অনন্য প্রাকৃতিক পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে এবং ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে এখানে অপূর্ব দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। একপাশে সমুদ্র, আরেক পাশে বরফে ঢাকা পাহাড়। এদের মিলন হয়েছে আঁকাবাঁকা পথে। বরফ, পানি আর বালুর পথ মিলে, যেন এক অপ্রাকৃতিক স্থান!
ইন্সটাগ্রামে ছবিটি ছড়িয়ে পড়ার পর ৬ লাখ ৫৮ হাজার ৮২৯ জন ব্যবহারকারী লাইক দিয়েছেন। কমেন্টের সংখ্যাও কম নয়।
ওয়েলথ নামের এক ব্যক্তি ইনস্টাগ্রামে ছবিটি আপলোড করে ক্যাপশনে লিখেছেন "জাপানের হোক্কাইডো সমুদ্র সৈকত বিশ্বের অন্যতম অনন্য স্থান, যেখানে সমুদ্র, বালি এবং তুষার একসাথে মেলে!”
আরেকজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, "আমার দেখা সবচেয়ে অবিশ্বাস্য এবং সুন্দর ছবিগুলির মধ্যে এটি একটি।"
ভ্রমণ পিপাসুরা প্রতি বছর এখানে ভিড় জমায়। বিশ্বের বিভিন্ন কোণা থেকে ছুটে আসে এই অপূর্ব দৃশ্যের প্রত্যক্ষ দর্শন করতে। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে এই স্থানটিকে জাপানের জিওপার্ক হিসেবে মনোনীত করা হয়। প্রায় ২ বছর পরই একে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে ‘গ্লোবাল জিওপার্ক’-এর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়