প্রয়াত লেখক, বিশিষ্ট শিক্ষা-উদ্যোক্তা, সমাজসেবক, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এবং সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের লেখা ৩০টি গ্রন্থ এবার একুশের বইমেলায় একত্রে পাওয়া যাবে। এবারই সৈয়দ আবুল হোসেনের লেখা ৩০টি বই প্রথম একুশে বইমেলায় প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সৈয়দ আবুল হোসেন ফাউন্ডেশন- এই মহতী আয়োজনের ব্যবস্থা করেছে। এবং এই বইগুলোর পরিবেশক মাতৃভাষা প্রকাশক। একুশে বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের লেকের পাড়ে অবস্থিত ১২৩, ১২৪, ১২৫ নং স্টলে বইগুলো পাওয়া যাবে।
সৈয়দ আবুল হোসেন ছিলেন একজন মননশীল ও প্রগতিশীল লেখক। সমসাময়িক ও অনুপ্রেরণাদায়ক চিন্তাভাবনা তাঁর লেখনিতে প্রতিভাত হয়েছে। তিনি দেশের রাজনীতি তথা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতি ও উন্নয়ন কর্মকা- নিয়ে যেমন লিখেছেন, তেমনি দেশের অর্থনীতির চিত্র তাঁর লেখায় অগ্রাধিকার পেয়েছে। দেশের সর্বস্তরের জনগণকে ইতিবাচক চিন্তা-ভাবনায় উদ্বুদ্ধকরণের বিষয় যেমন তাঁর লেখনিতে স্থান পেয়েছে, তেমনি অনুবাদগ্রন্থের মাধ্যমে মনীষীদের লেখার সাথে দেশের মানুষকে তিনি সম্পৃক্ত করার চেষ্টাও করেছেন। তাঁর লেখায় একদিকে যেমন সমাজ পরিবর্তনে বার্তা রয়েছে, অপরদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার কথাও লিপিবদ্ধ হয়েছে। তাঁর লেখনী সমাজ বিনির্মাণে আলোকবর্তিকা এবং চিরস্মরনীয় হয়ে থাকবে।
সৈয়দ আবুল হোসেন সাহেব লিখিত ও প্রকাশিত গ্রন্থগুলো হলো: ১. স্বাধীনতার জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ২. শেখ হাসিনা- সংগ্রামী জননেত্রীর প্রতিকৃতি, ৩. গণতন্ত্র, নেতৃত্ব ও উন্নয়ন, ৪. শেখ হাসিনার অসামান্য সাফল্য, ৫. বঙ্গজননী বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব, ৬. ব্যর্থ জোট শাসন ব্যর্থ পররাষ্ট্র নীতি, ৭. বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সুবর্ণ জয়ন্তী স্মারকগ্রন্থ (১৯৪৯-৯৯, ৮. গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার সংকট, ৯. আওয়ামী লীগের নীতি ও কৌশল-শিল্পায়ন ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ সমাবেশ, ১০. শেখ হাসিনার অক্ষয় কীর্তি পার্বত্য শান্তিচুক্তি, ১১. একুশে ফেব্রুয়ারী ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ১২. Memior: a Photo Album (Boao Forum for Asia), ১৩. আমি ও জবাবদিহিতা, ১৪. পবিত্র স্মৃতি অ্যালবাম, ১৫. আমার কথা, ১৬. বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু, ১৭. শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ভূমিকন্যা, ১৮. ইতিবাচকতাই আমার পাথেয়, ১৯. বিদ্যাসাগর, ২০. আমার চিঠিপত্র, ২১. প্রবচনগুচ্ছ, ২২. বঙ্গবন্ধুর ধর্মচিন্তা ও ধর্মচেতনা, ২৩. রাজপুত্র শেখ রাসেল, ২৪. আমার বাণী চিরন্তনী, ২৫. ইতিবাচক কথা, ২৬. পদ্মাসেতু সততার বিজয়গাঁথা, ২৭. আমাদের বিজয় আমাদের স্বাধীনতা, ২৮. ডাসার: পল্লিগ্রাম থেকে উপজেলা, ২৯. মহাত্মাগান্ধীর বাণী ও আমার কথা, ৩০. গৌতমবুদ্ধের বাণী ও আমার কথা।
এছাড়া, তিনি জীবনদ্দশায় আরো ৫টি বই লিখে গেছেন যা এখনো প্রকাশিত হওয়ার অপেক্ষায় আছে। বইগুলো হলো: আমার স্মৃতিকথা, আমার বক্তৃতামালা, বিশ্বের মনিষীদের চিরন্তন বাণী, আমার গ্রন্থাবলী, My point: Views I hold and positivity my pathway.
উল্লেখ্য, সৈয়দ আবুল হোসেন ২০১৪ সালে সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর নিয়ে পড়াশুনা ও লেখা-লেখি নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তিনি মনে করতেন, ‘লেখার ফল বই; বই জ্ঞানের সংরক্ষণাগার। বই প্রাগৈতিহাসিক কালের সঙ্গে বর্তমান এবং সুদূর ভবিষ্যতের সেতুবন্ধ। এমন অবিচ্ছিন্ন সেতুবন্ধ আর হয় না। পৃথিবীর সব সেতু হয়তো ধ্বংস হয়ে যাবে, সব সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যেতে পারে, কিন্তু বই, বইয়ের মাধ্যমে রচিত যুগ পরস্পরা সেতুটি কখনো নষ্ট হবে না, ধ্বংস করার সাধ্য কারো নেই’।