মতিয়ার রহমান বয়স ৪০। তার একমাত্র আয় রুটি বিক্রি। ক্ষুদ্র এই ব্যবসা করেই সংসার চালান তিনি। মতিয়ার রহমান সদর উপজেলার দক্ষিণ ফলিয়া গ্রামের মৃত সফিয়ার রহমানের ছেলে।
মতিয়ার রহমানের পৈত্রিক সূত্রে বসতভিটা ছাড়া অন্য কোনো সম্পদ নেই। বিয়েও করেছেন বটে। দাম্পত্য জীবনে দুই সন্তানের জনক। স্ত্রীসহ চার সদস্যের পরিবার তার। এক সময়ে অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোনো রকমে দিনযাপন করতেন। সারাদিন হাড়ভাঙা শ্রমের বিনিময়ে যা পেতেন তা দিয়ে সংসার চলতো না।
গ্রামের বাড়ি থেকে গাইবান্ধা শহর কাছাকাছি। এ সুবাদে প্রয়োজনীয় খরচাদি করতেন শহরের পুরাতন বাজারে। এ বাজারে শ্রমজীবী মানুষের সমাগম বেশি। শ্রমজীবী মানুষের আনাগোনা বেশি হওয়ায় ব্যাকারির তৈরি খাবার ছিল এখানে বেশ জনপ্রিয়।
শ্রমজীবী মানুষের কথা চিন্তা করে মতিয়ার রহমান সিদ্ধান্ত নেন রুটি বিক্রির। এনজিও থেকে ৫ হাজার টাকা লোণ নিয়ে শুরু করেন ব্যবসা। দৃঢ় মনোবল নিয়ে রুটি বিক্রির সরাঞ্জাম কেনেন। ওই পুরাতন বাজারের মসজিদের দক্ষিণ পাশে ছোট একটি ঘর ভাড়া নিয়ে শুরু করেন রুটির ব্যবসা। দীর্ঘদিনের এ ব্যবসায় সম্প্রতি মতিয়ার রহমানের ফিরে এসেছে সোনালি দিন। তার সংসারে এসেছে সচ্ছলতা।
মতিয়ার রহমান জানান, গমের আটা দিয়ে তাওয়াতে সেঁকে এ রুটি বানানো হয়। বাহারি ভর্তা, সবজিসহ গুড় দিয়ে রুটি বিক্রি করা হয়। এসব রুটি খেতে অনেকে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। দিন দিন সকল পেশা-শ্রেণির মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে গমের রুটি। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে রুটি বিক্রি। প্রতিদিন ২৫/৩০ কেজি আটার রুটি বিক্রি হয়। বিক্রিত অর্থ থেকে দুইজন কর্মচারীকে দৈনিক ৪০০ টাকা বেতন দিয়েও প্রায় ৫/৬শ টাকা আয় করেন।
সম্প্রতি মতিয়ার রহমানের রুটি বিক্রির ব্যবসা অনুকরণ করে গাইবান্ধার পুরাতন বাজারে আরও ৬/৭জন এ ব্যবসা শুরু করেছেন। বর্তমানে পুরাতন বাজারকে অনেকে রুটি পট্টি হিসেবে চেনেন ও জানেন।
রুটি ক্রেতা মাসুদ রহমান নিফা বলেন, ‘পুরাতন বাজারের রুটি এখন সবার কাছে জনপ্রিয় খাদ্য হিসেবে পরিচিত।'