রাজধানী ঢাকার সিদ্দিক বাজারে অবস্থিত বি আর টি সি মার্কেট। এখানে রয়েছে অসংখ্য জুতা স্যান্ডেলের দোকান। দেশের বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা পাইকারি কেনাকাটা করেন এ মার্কেট থেকেই।
বছরের দুটি ঈদকে সামনে রেখে এখানে কোটি টাকার জুতা স্যান্ডেল বেচাকেনা হয়। এ বেচাকেনার ওপরে নির্ভর করে ব্যবসায়ী ও কারখানা শ্রমিকদের সুখ-দুঃখ। গেল কয়েক বছরের মধ্যে এবার বিক্রির হার সর্বনিম্ন বলেই দাবি করছেন সেখানকার ব্যবসায়ীরা। এতে ব্যবসায়ী ও জুতা স্যান্ডেল তৈরির সাথে জড়িতদের মাঝে ব্যাপক হতাশা দেখা দিয়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, অন্য বছরের চেয়ে এবারে বাজারে এসেছে নতুন নতুন মডেলের জুতা স্যান্ডেল। ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যে দাম থাকলেও বিক্রি তেমন হচ্ছে না। সারা দেশ থেকেও জুতা ব্যবসায়ীদের তেমন সাড়া মিলছে না।
মেহেরপুরের বামুন্দী থেকে স্যান্ডেল কিনতে এসেছেন লিমন হোসেন। তিনি বলেন, অন্য বছরের চেয়ে নতুন কালেকশন বেশি। দাম সাধ্যের মধ্যে আছে।
সিদ্দিক বাজার বিএডিসি মার্কেটের সুগন্ধা সুজ স্বত্বাধিকারী মোঃ মফিজ বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এবার বেচাকেনা খারাপ যাচ্ছে। কাঙ্ক্ষিত ক্রেতা এখনও আসেনি।
লিবার্টি সুজের মোহাম্মদ কাইয়ুম বলেন, ‘ভারত ও চায়না থেকে আসা জুতা-স্যান্ডেলের বাজার সয়লাব। যার বিরূপ প্রভাব পড়েছে আমাদের দেশীয় জুতা-স্যান্ডেলের বাজারে।’
মেহেরপুরের গাংনীর লেডিস এর মালিক রেজাল ইসলাম বলেন, ‘জুতা স্যান্ডেলের চাহিদা এবার অনেক কম।’
সিদ্দিক বাজারের জুতা তৈরির কারখানার শ্রমিক সেলিম হোসেন বলেন, ‘আমাদের দেশের জুতা-স্যান্ডেলের মান অনেক ভালো। তবে ক্রেতাদের দৃষ্টি বাইরের জুতা-স্যান্ডেলের দিকে বেশি। দেশীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো বাঁচাতে সরকারের হস্তক্ষেপ চান তিনি।'
লাহা সু স্টোরের ম্যানেজার আলমগীর হোসেন বলেন, ‘১৪০ টাকা থেকে শুরু করে ৬৫০ টাকা পর্যন্ত পাইকারি দরে জুতা স্যান্ডেল বিক্রি হচ্ছে। মান অবশ্যই চায়না এবং ভারতের চেয়ে অনেক উন্নত।'
থ্রি স্টার সুজ স্বত্বাধিকারী মামুন হোসেন বলেন, ‘ঈদের এই কয়টা দিনে বেচাকেনা আরও বাড়তে পারে।’
নিউ মডেল সুজ এর স্বত্বাধিকারী বেলাল হোসেন বলেন, ‘জুতা স্যান্ডেল তৈরির জন্য আগে থেকেই অর্থ লগ্নি করা হয়েছে। বেচাকেনা না হলে ব্যবসায়ীদের পথে বসতে হবে।'
সামনে রয়েছে আরও কয়টি দিন। এর মধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা আসবেন জুতা স্যান্ডেল কিনতে। এমন প্রত্যাশায় পথ চেয়ে বসে আছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা।