গ্রামের নির্জন পথ। দুপাশে জঙ্গল ও ঝোপঝাড়ের রাজত্ব। গাছে গাছে চেনা-অচেনা পাখির কলতান। প্রকৃতির এমন নিবিড় মায়াবী পরিবেশে শুভ্রতা ছড়াচ্ছে সাদা সাদা ফুল। নাম জংলি টগর। পথের পাশেই কিংবা ঝোপঝাড়ে সবুজ পাতার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিয়ে নিজের সৌন্দর্যের খবর জানান দিচ্ছে টগর। যেনো এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য।
শনিবার (৮ জুন) সকালে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের ভুটিয়ার কোনা-নহাটা গ্রামে এই দৃশ্য ধরা পড়ে। স্থানীয়রা জানান, গ্রামের ঝোপঝাড়ে এই ফুলগাছ অহরহই দেখা যায়। কিন্তু বুনো ফুল হওয়ায় এটা নিয়ে মানুষের আগ্রহ কম। তবে ছোট শিশুরা গাছ থেকে ফুল ছিঁড়ে খেলা করে।
টগর চিরসবুজ উদ্ভিদ। আমেরিকা থেকে এই গাছ বাংলাদেশে এসেছে। সারা পৃথিবীতে ৪০ প্রজাতির টগর আছে। বাগান ছাড়াও এই গাছটিকে বনে জঙ্গলে জন্মাতে দেখা যায় বলে অনেকে একে ‘জংলি টগর’ বলে।
বাংলাদেশে কাঠমল্লিকা নামেও বেশ পরিচিত। কাণ্ডে দুধের মতো রস থাকায় একে কোনো কোনো এলাকায় দুধফুল নামেও আখ্যায়িত করা হয়। এর মূল সৌন্দর্য হলো বিশুদ্ধ সাদা বর্ণের ফুল।
বাংলাদেশ ও ভারতে এই দুই রকমের টগর পাওয়া যায়। একটি টগরের একক পাপড়ি, অন্যটির গুচ্ছ পাপড়ি। এদের ‘বড় টগর’ ও ‘ছোট টগর’ বলা হয়। ফুল, গন্ধহীন ও সুগন্ধিযুক্ত উভয়ই হতে পারে। ফুল ৩-৫ সেমি চওড়া হয়। ফুলের আগায় চ্যাপ্টা পাপড়ি থাকে। ফুল থেকে ফলও হয়। তার মধ্যে ৩ থেকে ৬টি বীজ হয়। বড় টগরের বোঁটা মোটা এবং একক ফুল হয়। পাতাও একটু বড়।
গৌরীপুর পাবলিক কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ শফিকুল ইসলাম মিন্টু বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বাগান ছাড়াও জঙ্গল ও ঝোপঝাড়ে টগর এমনিতেই জন্মে। কিন্তু আমাদের দেশের বনভূমি যে হারে উজাড় হচ্ছে তাতে এই গাছটি হুমকির মুখে পড়বে।’