ফুটবলের ভালোবাসায় পাকিস্তানের পাহাড়ি কন্যারা

, ফিচার

ফিচার ডেস্ক, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-08-27 06:26:57

পাকিস্তানের দূরবর্তী উত্তরাঞ্চলে ছবির মতো সুন্দর বরফে ঢাকা পাহাড়ি এলাকা শিমশালের জার্থগারবেনে ফুটবল খেলায় মত্ত সেখানকার তরুণীরা। সমাজের অচলায়তন ভেঙে নিবেদিতপ্রাণ কিছু তরুণী জায়গাটির ইতিহাস-ঐতিহ্যকে নিয়ে যাচ্ছে নতুন উচ্চতায়।

সম্প্রতি সেখানে ৩০ জনের মতো তরুণী ফুটবলার চারঘণ্টার বিপদসঙ্কুল পাহাড়ি অঞ্চল পাড়ি দিয়ে ফুটবল খেলতে গিয়েছিল। খবর গালফ নিউজের। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪,১০০ মিটার উঁচু এই খেলার মাঠটি পরিচিত “বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু খেলার মাঠ” হিসেবে।

১১ থেকে ২২ বছর বয়সী এ তরুণীরা প্রতিকূল মাঠ ও উচ্চতাজনিত শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যাকে মোকাবেলা করেই খেলেছে তাদের প্রাণের খেলা।

স্থানীয় ইমারাতি সংবাদমাধ্যমকে ২১ বছর বয়সী সাজিনা মির্জা বলেন, “মেয়েরা সবাই মিলে সেই উঁচু জায়গায় ওঠাটা আসলেই গৌরবের একটি মুহূর্ত। আমরা বিশ্বাস করি, পাহাড় টপকে এই উচ্চতায় গিয়ে খেলাটা এক সময় বিশ্বরেকর্ডের অংশ হবে।”

সাজিনাসহ এখানকার বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই গিলগিত-বালতিস্তানের হুনজা ও শিমশাল এলাকার। চীনের সীমান্তঘেরা পাকিস্তানের প্রত্যন্ত এক গ্রাম এই শিমশাল। গ্রামটিতে মাত্র ২,০০০ অধিবাসীর বাস। তবে, এদের মধ্যেই পর্বতারোহী সামিনা বেগসহ রয়েছে আরো কিছু উদ্যোমী নারী।

“এখানে খেলাটা আসলে তেমন কিছুই না, তবে এতে করে আমরা দেখাতে পারছি মেয়েরাও কঠিন জীবন-পরিস্থিতিতে সমানভাবে এগিয়ে চলতে সক্ষম”—মন্তব্য স্ট্রাইকার হিসেবে খেলা সাজিনা মির্জার।

এতে করে নিজেদের ক্ষমতায়নে সংগ্রামরত স্থানীয় নারীরা অনুপ্রাণিত হবে বলে তার বিশ্বাস।

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪,১০০ মিটার উঁচুতে এই ফুটবল ম্যাচটির আয়োজন করেছিল আল-শামস নারী ফুটবল দল। ক্লাবটির প্রতিষ্ঠাতা স্থানীয় উপত্যকার আজিম বাকির, মুনওয়ার আলী ও তাদের চাচাত বোন কারিশমা ইনায়াত।

আজিম বাকির বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ফুটবল ম্যাচের মাধ্যমে পাকিস্তানের প্রত্যন্ত উপত্যকা থেকে পুরো বিশ্বের কাছে শান্তি ও সমতার বার্তা পাঠানো।”

বাকির, মুনওয়ার ও কারিশমা ম্যাচটি নিয়ে এতই উৎসাহী ছিলেন যে পর্যাপ্ত ফান্ডের জন্য অপেক্ষা না করে নিজেদের পকেট থেকে এবং আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিতদের কাছ থেকে চাঁদা তুলেই নারীদের ফুটবল প্রশিক্ষণের আয়োজন করেন।

বর্তমানে ২০ তরুণী এই ফুটবল ক্লাবের সদস্য। তাদের উদ্যোগে আয়োজিত গ্রীষ্ম ও শীতকালীন ক্যাম্পে হুনজা, শিমশাল ও সোস্তা এলাকায় ফুটবল ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকে ১২০ তরুণী ফুটবলার।

এ সম্পর্কিত আরও খবর