প্রেম করে বিশ্বখ্যাত খুনের দুই আসামি

, ফিচার

জাভেদ পীরজাদা, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট | 2023-08-29 08:25:03

চার্লস শোভরাজ

নেপালের ধনী পরিবারের মেয়ে নিহিতা বিশ্বাসকে বিয়ে করেছিলেন চার্লস শোভরাজ। সংসার ভেঙে যায় দাম্পত্য অশান্তিতে। এরপর তিনি পশ্চিমা নারীদের সঙ্গে প্রেমের অভিনয় করে আর্থিকভাবে লাভবান হতেন এবং একসময় প্রেমিকাকে খুন করে ফেলতেন। ১২ জনের বেশি নারীকে খুন করে সিরিয়াল কিলার হন চার্লস শোভরাজ।

তিনি আসামির কাঠগড়ায় বলেছিলেন, “আমি গরিব ছিলাম বলে অনেক অপমানিত হয়েছি। কিন্তু দেখতে সুন্দর ছিলাম। আর দর্শনশাস্ত্র ও মনোবিদ্যা বেশি করে পড়েছিলাম। ফলে নারীর মন বুঝতে সাইকো-এনালাইসিস করতাম। আর দর্শনের ‘নিহিলিজম’ আমাকে অপরাধ করতে বাধা দিত না।” এসব তথ্য জানান তার জীবনীকার ডেভিড রবিনসন।

সিরিয়াল কিলার শোভরাজের জীবনী নিয়ে মুভি হয়েছে। ২০১৫ সালে রনদীপ হুদা তৈরি করেন হিন্দি মুভি ‘ম্যা আউর চার্লস।’ এছাড়া হলিউডে হয়েছে ‘বিকিনি কিলার।’

চার্লস শোভরাজের জীবনী নিয়ে সিনেমা হয়েছে


শোভরাজের জন্ম ১৯৪৪ সালের ৬ এপ্রিল ভিয়েতনামে। কিন্তু ফ্রান্স ও ভারতসহ আরো কয়েকটি দেশের নাগরিকত্ব ছিল তার। বাবা ছিলেন ভারতীয়। চার্লস শোভরাজ খুন করে একদেশ থেকে অন্য দেশে পালিয়ে বেড়াতেন। ভারতের তিহার জেল থেকেও পালিয়েছিলেন।

২০১৯ সালে ৭৫ বছর বয়সী চার্লস শোভরাজ (ডানে)


তার এই খুনের ঘটনাগুলো ঘটেছিল ১৯৬৩ থেকে ১৯৭৭ সাল অব্দি। ডেভিড রবিনসন জানান, খুনগুলো করে মিলিয়নিয়ার হন সিরিয়াল কিলার চার্লস শোভরাজ, যিনি বিকিনি কিলার হিসেবেও কুখ্যাতি লাভ করেছিলেন। ছবি মুক্তিলাভের পর দেদার টাকা পেয়েছেন, এরপর ফ্রান্সে ইন্টারভিউ দিয়ে আরো কামিয়েছেন। এখন তার বয়স ৭৫।

জন হিঙ্কলে

জন হিঙ্কলে ধনী পরিবারে জন্ম নিলেও গ্র্যাজুয়েশনের ফলাফল খারাপ করার পর মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। সেসময় পরিবার থেকেও পাননি কোনো সহায়তা। তাই বাধ্য হয়ে কিছুদিন ট্যাক্সি চালান।

সময়টা ১৯৭৬ সাল। সে বছরই মুক্তি পায় জুডি ফস্টার অভিনীত ‘ট্যাক্সি ড্রাইভার’ মুভিটি। মুভির কাহিনী ছিল এক ট্যাক্সিচালককে জুডি ভালোবাসে। এ মুভিটি দেখে হিঙ্কলে প্রেমে পড়েন অভিনেত্রী জুডি ফস্টারের। নিজেকে ভাবতে শুরু করেন মুভির গরিব ট্যাক্সিচালক।

ট্যাক্সি ড্রাইভার মুভির একটি দৃশ্যে জুডি ফস্টার ◢


একসময় জুডি ফস্টারের সাথে কৌশলে দেখা করে প্রেমের প্রস্তাব করেন। জুডি বলেন, “কে তুমি? তুমি তো বিখ্যাত কেউ না। আগে আমার মতো বিখ্যাত হও এরপর প্রেমের অফার করো।” হিঙ্কলের মাথায় বিখ্যাত হওয়ার ভূত চাপে।

১৯৮১ সালের ৩০ মার্চ ওয়াশিংটন ডিসিতে এক অনুষ্ঠানে সেসময়ের প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানকে গুলি করে বসেন। রিগ্যান মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যান। হিঙ্কলে রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে পড়েন। জেল হয়। বিচারক পরে মানসিক ভারসাম্যহীন বিবেচনা করলে তাকে এলিজাবেথ স্যানাটোরিয়ামে ভর্তি করা হয়।

প্রেসিডেন্টের ওপর হামলার পরপর


২০১৬ সালে ৩৫ বছর পর তিনি মুক্তি পান। তার জন্ম ওকলাহোমায় ১৯৫৫ সালের ২৯ মে। এখন তার বয়স ৬৩। ভার্জিনিয়ায় মায়ের সাথে থাকেন।

জন হিঙ্কলে : তখন এবং এখন


আমাজানে বই বিক্রেতা হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি স্থানীয় চার্চে ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করেন। দ্য মেইল সূত্র জানায়, চার্চে ২০১৭-র জানুয়ারিতে জুডির সামনে হঠাৎ হিঙ্কলে পড়ে গেলে জুডি বলেন, “তুমি এখন অনেক বিখ্যাত। কিন্তু আমি বুড়িয়ে গেছি।”

জুডি ফস্টার : এখন


জবাবে হিঙ্কলে বলেন, “জীবন ও ভালোবাসার গ্রামার আজও শিখিনি।” এতটুকুই, এরপর দুজন দুদিকে চলে যান।

আরো পড়ুন ➥ বিশ্বসেরা নর্তকী ও ভয়ঙ্কর নারী খুনির গল্প

এ সম্পর্কিত আরও খবর