রাখাল ঘোষের দই

, ফিচার

মাহবুব আলম, অতিথি লেখক | 2023-08-21 05:11:57

রাখাল ঘোষ মারা গেছেন বহু বছর আগে। কিন্তু তার দই উত্তরবঙ্গের মানুষের মনে এখনো নাড়া দেয়।

রাখাল ঘোষ রাজশাহীর শলুয়া ঘোষপাড়ার একজন দই বিক্রেতা। তিনি এখন আমাদের মাঝে বেঁচে নেই। শিশু ও কৈশোরে রাখাল ঘোষের দইয়ের স্বাদ এখনো মুখে লেগে আছে।

জীবন পথের বাঁকে বাঁকে বাংলাদেশের অনেক জায়গায় ভ্রমণের ও চাকরির কারণে অবস্থানের সুবাদে নানা ধরনের দই-এর স্বাদ নিয়েছি। কিন্তু শলুয়া ঘোষপাড়ার রাখাল ঘোষের দই এর মতো দই আর কখনো পাইনি।

রাখাল ঘোষের দই-এর বৈশিষ্ট ছিল অনন্য। গাভির খাটি দুধ দিয়ে তৈরি। টক মিষ্টি দই। তিনি বলতেন, দই-এ কখনো স্যাকারিন ব্যবহার করেন নি। চিনিও খুব কম দিতেন। রাখাল ঘোষের ঐতিহ্যবাহী টকমিষ্টি দই-এর নিয়মিত ক্রেতা ছিলেন আমার পিতা মরহুম আলহাজ্ব বানী এসরাইল ও আমার ছোট চাচা মরহুম আকবর আলী।

রাখাল ঘোষকে আমার আব্বা ও ছোট চাচা দই-এর অর্ডার দিতেন। রাখাল ঘোষের দই, নিশ্চিত করে বলতে পারি, বাংলাদেশের অন্যতম সেরা দই।

সম্ভবত আশির দশকের শুরুতে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান তিনি। ,এবং পরবর্তীতে ভারতেই প্রয়াত হন।সম্ভবত ছেলের সাথে বনিবনা না হওয়ায় এবং বয়স হওয়ায় আগের মত দই বিক্রি বা বানাতে না পারায় তিনি প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান। তার ছেলে সন্তোষ ঘোষ বাবার মত দই তৈরি করতে পারতেন না। শিশুবেলার রাখাল ঘোষের দই-এর কথা আমৃত্যু ভুলতে পারবো না।

রাখাল ঘোষ আমাদের কালের একজন স্থানীয় নায়ক। তিনি নেই, কিন্তু উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জনপদের লোকশ্রুতিতে এখনো তিনি বেঁচে আছেন।

লেখক: যুগ্ম সচিব। নির্বাহী কর্মকর্তা, গাজিপুর জেলা পরিষদ।

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর