ভুনা খিচুড়ি এমনিতেই অনেক মুখরোচক একটি খাবার। গরুর মাংসের সাথে ভুনা খিচুড়ির স্বাদ অতুলনীয়। আর সেই খিচুড়ির সাথে যদি সমপরিমাণ গরুর মাংস ও জলপাই আচাঁড়ের স্বাদে শশার সালাদ আর লেবু হলে তো কথাই নেই। এর চেয়ে মজার খাবার আর কি হতে পারে?
গরুর মাংসের সাথে ভুনা খিচুড়ির স্বাদ অতুলনীয়। আর ভুনা খিচুড়ি খেতে পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কষ্টের। আর এত সব কিছু যদি পাওয়া যায় মাত্র ৮০ টাকায় তাহলে তো সোনায় সোহাগা। ৮০ টাকায় সমপরিমাণ মাংস ও সালাদ দিয়ে এক প্লেট খিচুড়ি আর তাতে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির পেট ভরবে নিশ্চিত। আর সেই খিচুড়ি বিক্রি করছেন শুক্কুর মিয়া । তাই তার নামের অনুসারে পরিচিত হয়ে আছে "শুক্কুরের খিচুড়ি"।
এই খিচুড়ি খেতে চাইলে চলে আসতে হবে মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার পুরাতন কাওড়াকান্দি ঘাট সংলগ্ন বেইলী ব্রীজ বাজারে। প্রতিদিন বিকাল ৪টা থেকে থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত শুক্কুর মিয়ার এই দোকানে বিক্রি করা হয় 'শুক্কুরের খিচুড়ি'। প্রতিদিন প্রায় ৪ ডেগ খিচুড়ি বিক্রি করা হয়। এতে কমপক্ষে এক হাজার প্লেট খিচুড়ি বিক্রি করেন শুক্কুর মিয়া।
মাদারীপুর জেলাসহ আশে পাশের শরিয়তপুর, ফরিদপুর,বরিশাল ও গোপালগঞ্জের সব শ্রেণি পেশার মানুষ এখানে আসে এই খিচুড়ি খেতে। তবে এদের মধ্যে যুবক শ্রেণীর সংখ্যাই বেশি।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৩০ জন ক্রেতা সিরিয়ালে দাড়িয়ে আছেন খিচুড়ি খাওয়ার জন্য। আর বেশি ক্রেতা হওয়ায় দোকানের কর্মচারীরাও খুব ব্যস্ত। শুক্কুর মিয়াসহ মোট ৭ জন কর্মচারী প্রতিদিন বিকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করেন। এসকল কর্মচারীর দুইজনকে দেখা যায় পাতিল থেকে প্লেটে খিচুড়ি দিতে আর দুইজনকে দেখা যায় খাবার পরিবেশন করতে। আর বাকি দুইজন চেয়ার টেবিল ও প্লেট পরিষ্কার করছে।
শুক্কুর মিয়ার এই দোকানটি আধুনিক সাজ সজ্জিত না হলেও মোটামুটি পরিষ্কার। দোকানটি মাঝারী সাইজের হওয়ায় একসঙ্গে ৩০ জন বসে খাবার খেতে পারে। অনেকেই আবার বাহিরে চেয়ারে বসে খাচ্ছেন। এতে দেখা যায় অনেকেই এক প্লেট খিচুড়ি খেয়েই প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
শিবচরের এক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক নাজমুল হোসেন লাভলু বলেন, 'আমি প্রায়ই আসি শুক্কুর ভাইর খিচুড়ি খেতে। খিচুড়িটা আমার খুব প্রিয়।'
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থেকে আসা নাইম আহম্মেদ বলেন, 'একদিন ঢাকা যাওয়ার সময় এই খিচুড়িটা খেয়ে ছিলাম। খুব ভালো লাগছিলো। তাই বাড়ি থেকে ঢাকা আসা যাওয়ার পথে ডেইলি খেয়ে যাই।'
শরিয়তপুর থেকে আগত সান্তা আক্তার বলেন, 'সারা বছর শুক্কুরের খিচুড়ির নাম শুনেছি, তাই বন্ধু বান্ধবীরা আসছি এই খিচুড়ি খেতে। আসলেই খিচুড়িটা খুব চমৎকার।'
শুক্কুর মিয়া বলেন, 'আমরা প্রতিদিন ৪ ডেগ খিচুড়ি বিক্রি করি। আমাদের খিচুড়িতে লাভ খুব কম হয়। তবে অনেক বিক্রি হয় তাই আমাদের ব্যবসা ভালো হয়।'
তিনি আরো বলেন, 'প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে শত শত মানুষ এখানে আসে তাতে ভালোই ব্যবসা হয়। মানুষ খেয়ে প্রশংসা করে এতে খুব ভালো লাগে।'