দেলোয়ার দম্পতির বাগান ঘুরে (গাজীপুর, শ্রীপুর): নানা উৎসবের দেশ বাংলাদেশ। আর এসব উৎসবকে ঘিরে চাহিদা রয়েছে নানা ফুলের। প্রায় দেড় দশকের চেয়েও বেশি সময় ধরে ফুলচাষে সম্পৃক্ত এক দম্পতি। তাদের তিনটি বাগান থেকে বিভিন্ন উৎসবে যায় অনেক ফুল।
গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার কেওয়া গ্রামের ফুলচাষি দেলোয়ার হোসেন। তার স্ত্রী শেলী হোসেন। দুজনের চেষ্টায় গড়ে উঠেছে তিনটি ফুল বাগান। এসব বাগানে রয়েছে বিভিন্ন জাতের গোলাপ, টিউলিপ, লিলিয়াম ছাড়াও কয়েক ধরনের ফুল।
বিদেশি ফুল গ্ল্যাডিওলাস নিয়ে পরীক্ষা শুরু করে এক সময় তারা লিলিয়াম ও জারবেরা চাষেও মনযোগী হন। তিন বছর আগে এই দম্পতি ডাচ রয়েল ভ্যান জ্যান টেন নামক একটি প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ নেন। সংস্থাটির কাছ লিলিয়ামের বাল্ব সংগ্রহ করেন। এছাড়াও এই দম্পতি এক অসাধ্য সাধন করেছেন। শীতের দেশের ফুল টিউলিপ ফুটিয়েছেন তারা।
বাংলা গোলাপ, চায়না গোলাপ, ক্যাপসিকাম, স্ট্রবেরি ও লিলি ফুলে ছেয়ে গেছে রয়েছে তাদের বাগান। তাদের অন্য একটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, সেখানে চলছে গোলাপের কলমের কাজ। পুরুষ গোলাপ গাছের অংশ এবং স্ত্রী গাছের অংশ একসঙ্গে লাগানোর কাজ করছেন কয়েকজন কর্মী।
জানা গেছে, নিজের তিন বিঘা এবং ভাড়ায় প্রায় পনের বিঘা জমিতে ফুল চাষ শুরু করেন। ২০১৭ সালে বঙ্গবন্ধু কৃষি পদকে ভূষিত হয়েছিলেন।
বাগানের পরিচর্যাকারী এরশাদ উদ্দিন জানান, তাদের বাগানে বেশ কয়েক ধরনের ফুল রয়েছে। নিজ জেলা ছাড়িয়ে অন্যান্য জেলা থেকে ফুল ও ফুলের গাছ কিনতে আসেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয় রাসেল মিয়া জানান, সম্পর্কে দেলোয়ারের ভাই হওয়ায় তিনিও মাঝে মধ্যে পরিচর্যা করেন ফুল বাগানের। অন্যান্য ফুলের চেয়ে টিউলিপে আগ্রহ বেশি মানুষের। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে দর্শনার্থীরা আসেন।
দেলোয়ার হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ফুল চাষ বেকার জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থানের একটি সুযোগ হতে পারে। ঠিক মত সময় দিলে এবং পরিচর্যা করলে ভালো ফলন সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, শুধু বাণিজ্যিকভাবে নয়, পর্যটকদের জন্যও ফুলের বাগান করা যেতে পারে। শীত প্রধান দেশের ফুল টিউলিপ চাষে এবার সাফল্য এসেছে। আগামী বছর থেকে আরও বড় পরিসরে শুরু করতে চাই।
ফুলচাষকে আধুনিক কর্মসংস্থানের উপায় হিসেবে উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমরুল কায়েস বার্তা২৪.কম-কে বলেন, বাংলাদেশে ফুলের অনেক চাহিদা রয়েছে। তাছাড়া এসব নিয়ে নানা গবেষণারও সুযোগ রয়েছে। এতে নতুন জাত উদ্ভাবন করা যেতে পারে।
ফুল চাষ করা হলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি করা যেতে পারে। আমরা দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে মিলে কাজ করতে পারি। আমাদের উচিত তাকে সহযোগিতা করা- যোগ করেন তিনি।