৯ মাসে মালয়েশিয়ায় ৪৪১ বাংলাদেশির সেকেন্ড হোম

, প্রবাসী

মাজেদুল নয়ন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-23 15:30:20

গত নয় মাসে মালয়েশিয়া মাই সেকেন্ড হোম (এমএম২এইচ) কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন ৪৪১ জন বাংলাদেশি। হংকংয়ের নাগরিকদের পরই গত এক বছরে সবচেয়ে বেশি অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশিরা।

২০০২ সালে মালয়েশিয়া সরকারের চালু করা এ কর্মসূচি ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এরপর থেকে এবার সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি অংশ নিয়েছেন, জানাচ্ছে পুত্রজায়া সূত্র।

মালয়েশিয়ার পর্যটন, কলা এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব দাতুক ইহসাম ইসহাক সোমবার (আগস্ট ২৬) গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এখনো মালয়েশিয়াতে সবচেয়ে বেশি সেকেন্ড হোমে অংশ নেওয়া নাগরিক চীনের। এরপরই জাপান এবং বাংলাদেশ। তবে সাম্প্রতিক সময়ে হংকংয়ে বিদ্রোহের পর থেকে সেখানকার নাগরিকরাও সেকেন্ড হোমের জন্য আবেদন বাড়িয়েছেন।

তবে তাদের অন্য সব আবেদনের মতোই নিয়ম মেনে সেকেন্ড হোম কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

চলতি বছরের আগে ২০১২ সালে সেকেন্ড হোম প্রকল্পে সর্বোচ্চ বাংলাদেশিরা অংশ নেন। এ সংখ্যা ছিল ৩৮৮। এ বছরের প্রথম নয় মাসেই এ সংখ্যা দেখা যাচ্ছে ৪৪১।

সোমবার মালয়েশিয়ায় বিশ্ব পর্যটন সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী তুন ড. মাহাথির মোহাম্মদ। অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

২০১৫ সাল থেকে এ কর্মসূচিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে পর্যটন, কলা এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

তিনি বলেন, গত বছরের তুলনায় হংকংয়ের নাগরিকদের এ কর্মসূচিতে আবেদন বেড়েছে। গত বছর ২৫১ জন আবেদন করেছিলেন। এবার নয় মাসেই আবেদন করেছেন ২৯৩ জন। এছাড়া বাংলাদেশিদের আবেদনও বেড়েছে।

এর আগে পর্যটন, কলা এবং সংস্কৃতিমন্ত্রী দাতুক মোহামাদ্দিন কেতাপি জানিয়েছেন, বর্তমানে সেকেন্ড হোম কর্মসূচিতে বিভিন্ন দেশের ৪৩ হাজার ৯৪৩ জন নাগরিক রয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছেন চীনের- ১৩ হাজার ৮৯২ জন।

মালয়েশিয়ার এ সেকেন্ড হোম কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বিদেশি নাগরিকদের মধ্যে বাংলাদেশিদের অবস্থান তৃতীয়।

এর আগে ২০১৮ সালের নভেম্বরে মালয়েশিয়া সরকারের প্রকাশিত এক পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ‘মালয়েশিয়া মাই সেকেন্ড হোমে (এমএম২ এইচ)’ অংশ নিয়েছেন তিন হাজার ৭৪৬ জন বাংলাদেশি। এর মধ্যে ২৫০ জন সেখানে বাড়িও কিনেছেন। ওই প্রকল্পে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশিরা যেমন তৃতীয় অবস্থানে আছেন, তেমনি বাড়ি কেনার ক্ষেত্রেও একই অবস্থানে তারা।

যেহেতু বাংলাদেশ থেকে বৈধভাবে অর্থ নিয়ে মালয়েশিয়ায় বাড়ি কেনার কোনো সুযোগ নেই। ফলে দেশের যারা সেখানে বাড়ি কিনেছেন, তারা মূলত টাকা পাচার করেছেন বলে অভিযোগ করেছিল ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ।

সেকেন্ড হোম প্রকল্পের আওতায় মালয়েশিয়ার ব্যাংকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা রেখে বিদেশি নাগরিক দেশটিতে দীর্ঘমেয়াদি বসবাস ও অন্যান্য সুবিধা পান। তারা সেখানে বাড়িও কিনতে পারেন।

সেকেন্ড হোম প্রকল্পে বাংলাদেশিরা অংশ নিচ্ছেন ২০০৩ সাল থেকে। মালয়েশিয়া সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ওই বছর ৩২ জন বাংলাদেশি এ কর্মসূচিতে অংশ নেন। এ পর্যন্ত মোট চার হাজার ১৮৭ জন বাংলাদেশি এতে অংশ নিয়েছেন।

মালয়েশিয়ার পর্যটনমন্ত্রী দাতুক কেতাপাই জানিয়েছেন, ২০১৯ সালের আগস্ট পর্যন্ত ১৩১টি দেশের ৪৩ হাজার ৯৪৩ জন সেকেন্ড হোম প্রকল্পের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় সম্পদ রেখেছেন। যার মধ্যে চীনের পরে জাপানের অবস্থান। জাপানের চার হাজার ৮৮২ জন এ প্রকল্পে রয়েছেন। এরপরেই তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন বাংলাদেশের নাগরিকরা। যার সংখ্যা চার হাজার ১৮৭। এরপরে রয়েছেন যুক্তরাজ্যের দুই হাজার ৭২৯ জন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার দুই হাজার ৫৬৮ জন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর