অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ৯০% কার্যকর, সহজে পরিবহনযোগ্য

, আন্তর্জাতিক

নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-08-18 12:24:26

যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা একটি সম্পূর্ণ ডোজ প্রয়োগের একমাস পর অর্ধেক ডোজ দিলে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকারিতার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

বিজ্ঞানীরা জানান, ট্রায়ালের এক অংশে স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে প্রথমে সম্পূর্ণ টিকার ডোজ দেওয়া হয়, এর একমাস পর অর্ধেক ডোজ দেওয়া হলে অক্সফোর্ডের টিকা ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর হতে পারে।

অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার  টিকা ফাইজার ও মডার্নার টিকার তুলনায় অনেক সাশ্রয়ী এবং সংরক্ষণে জটিলতা নেই। অক্সফোর্ডের টিকাকে আলাদাভাবে কোন তাপমাত্রায় সংক্ষরণের প্রয়োজন হবে না। ফার্মাসি বা চিকিৎসকের চেম্বারের সাধারণ ফ্রিজেও রাখা যাবে।

অক্সফোর্ডের টিকা ট্রায়ালের প্রধান পর্যবেক্ষক অধ্যাপক অ্যান্ড্রু পোলার্ড ‘এই টিকা মহামারির ভয়াবহতা থেকে অনেক মানুষকে বাঁচাবে’ বলে মন্তব্য করেছেন।

তিনি বলেন, ‘ট্রায়ালের পর্যালোচনা আমরা দেখেছি এই টিকা ডোজিং সিস্টেমে দেওয়া হলে প্রায় ৯০ শতাংশ কার্যকর হতে পারে। যদি এই ডোজিং পদ্ধতিটি ব্যবহার করা হয়, তাহলে পরিকল্পিতভাবে আরও বেশি মানুষকে টিকা সরবরাহ করা যাবে।’

সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানায়, তাদের তৈরি টিকা করোনা থেকে সুরক্ষা দেবে ৭০ শতাংশ। তবে দুইবার আলাদাভাবে ডোজ দেওয়া হলে ভিন্ন ফলাফল দেখা যায়। এ টিকার দুই ধরনের ডোজের তথ্য বিশ্লেষণে একটিতে ৯০ শতাংশ এবং অন্যটিতে ৬২ শতাংশ কার্যকারিতা দেখা গেছে। একটি সম্পূর্ণ ডোজ দেওয়ার একমাস পর অর্ধেক ডোজ দিলে তা ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর হয়।

অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তাদের টিকার বিশ্বব্যাপী ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করেছে। সম্প্রতি তারা বৃটেন ও ব্রাজিলে ১৩১টি করোনাভাইরাস সংক্রমণের উপর ট্রায়াল সম্পন্ন করেছেন। এতে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রয়া বা জটিলতা হয়নি। টিকা প্রয়োগে কোন স্বেচ্ছাসেবীকে হাসপাতালেও যেতে হয়নি।

গত সপ্তাহে ফাইজার-বায়োএনটেক এবং মর্ডানা তাদের ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার তথ্য জানিয়ে দিয়েছে। উভয় সংস্থা দাবি করেছে করোনা থেকে সুরক্ষা দিতে তাদের ভ্যাকসিন ৯৫ শতাংশ কার্যকর।  ফাইজার ইতিমধ্যে মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনে (এফডিএ) টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন চেয়ে আবেদনে করেছে।

কার্যকারিতার দিকে থেকে অক্সফোর্ডের টিকা আগের দুটির চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও এটির সংরক্ষণ প্রক্রিয়ায় জটিলতা নেই। এই টিকা ৬ মাস পর্যন্ত সাধারণ ফ্রিজে রাখা ও পরিবহন করা যাবে। যেখানে ফাইজারের ভ্যাকসিন মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হবে। অন্যদিকে মডার্নার টিকা ৩০দিন পর্যন্ত ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখা যাবে।

বৃটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক অক্সফোর্ডের টিকার কার্যকারিতাকে ‘সুসংবাদ’ বলে মন্তব্য করেছেন।

এদিকে ‘গুড মর্নিং বৃটেন’ টিভি শোতে  ডা. হিলারি জোন্স দর্শকদের আশ্বাস দিয়েছেন, অক্সফোর্ডের টিকা ফ্লু জ্যাবের (ফ্লু টিকা) মতো কার্যকর। তিনি কোভিড -১৯ প্রতিষেধক এই টিকার সংবাদকে ‘সুসংবাদ’ বলেছেন। তিনি বলেন, আমরা ৭০ শতাংশ কার্যকারিতার একটি বাস্তবসম্মত তথ্য পেয়েছি।

‘মজার বিষয় এটি ফ্লু টিকার মতো কার্যকর, ফ্লু টিকা সাধারণত ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ কার্যকার হয়। এটি একটি সুসংবাদ, এর অর্থ আমরা এখন বিপুল সংখ্যক মানুষকে বাঁচাতে পারব।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর