বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্যে ফাইজার ও বায়োএনটেক উদ্ভাবিত করোনা টিকার অনুমোদন পাওয়ার পর আজ মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) থেকে টিকাটির প্রয়োগ শুরু হচ্ছে।
দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস) এই কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
এনএইচএস জানিয়েছে, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যুক্তরাজ্যে টিকা প্রদান কর্মসূচি হবে। প্রথমে করোনার সম্মুখসারির যোদ্ধা স্বাস্থ্যকর্মীদের এ টিকা প্রদান করা হবে। এরপর ৮০ বছরের বেশি বয়স্ক ব্যক্তি ও কেয়ার হোমের কর্মীরা টিকা পাবেন। এছাড়া স্বাস্থ্যঝুঁকিতে যারা রয়েছেন তারাও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকাটি পাবেন।
ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্যে ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকার ডোজের প্রথম চালান এসেছে। ৮ লাখ ডোজ দেশটির হাতে রয়েছে বলে জানা গেছে।
গত সপ্তাহে ফাইজার-বায়োএনটেকের যৌথ উদ্যোগে তৈরি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দেয় যুক্তরাজ্য।
যুক্তরাজ্য করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণকারীদের একটি আইডি কার্ড প্রদান করবে। সোমবার (৭ ডিসেম্বর) সেই কার্ডের ছবি প্রকাশ করেছে।
কার্ডটি টিকা গ্রহণের প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে। সরকারের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে সব সময় কার্ডটি সঙ্গে রাখার জন্য। তবে অনেকেই আশঙ্কা করছেন, ভ্যাকসিন আইডি কার্ডকে অনেকেই ইমিউনিটি পাসপোর্ট হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন এবং এতে করে যারা এখনও টিকা গ্রহণ করেননি তারা বৈষম্যের শিকার হবেন।
এনএইচএস জানিয়েছিল, স্বাস্থ্য পরিষেবায় দেশের ইতিহাসে সবচয়ে বড় টিকা প্রদান কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য। এজন্য প্রায় ৫০ টি হাসপাতাল তৈরি রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সম্মেলন কেন্দ্রগুলিতেও টিকা প্রদানের বুথ স্থাপন করা হচ্ছে। স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডেও আজ থেকে টিকা প্রদান শুরু হবে। এসব জায়গায়ও হাসপাতাল থেকে টিকা দেওয়া হবে।
যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক করোনার টিকা প্রয়োগ কার্যক্রমের শুরুকে একটি ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। করোনাভাইরাস রুখতে প্রত্যেককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ফাইজার ও বায়োএনটেকের দাবি, তাদের উদ্ভাবিত করোনার টিকা ৯৫ শতাংশ কার্যকর। এখনও পর্যন্ত ছয়টি দেশে ৪৩ হাজার ৫০০ জনের শরীরে ফাইজার ও বায়োএনটেক টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে এবং এতে ঝুঁকিপূর্ণ কিছু দেখা যায়নি।
ফাইজার ছাড়াও ইতোমধ্যে আরেক মার্কিন কোম্পানি মডার্না জানিয়েছে, তাদের উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন চূড়ান্ত পরীক্ষায় প্রায় ৯৫ শতাংশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। তারা অনুমোদনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনে আবেদন করেছে। এছাড়া রাশিয়ার উদ্ভাবিত স্পুতনিক নামক টিকাটিও ৯০ শতাংশের বেশি কার্যকর। রাশিয়া টিকা প্রদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে।