টিকা প্রয়োগ শুরুর ১৫ দিনের মধ্যে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন রফতানি শুরু করবে ভারত বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।
মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) ওই কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভারত যে ভ্যাকসিন তৈরি করছে তা রফতানি নিষিদ্ধ করা হবে বলে যে খবর বেরিয়েছে তা অসত্য।
ভারত সারা বিশ্বে প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিনের প্রায় ৬০ শতাংশ তৈরি করবে। ভারতে তৈরি এই ভ্যাকসিন পেতে অনেক দেশ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে বলেও তিনি জানান।
ভারত এই জানুয়ারিতেই টিকা প্রয়োগের লক্ষ্যে দুটি ভ্যাকসিনের জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। জুলাইয়ের মধ্যে তারা প্রায় ৩০ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
ভারতের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ড্রাগ কন্ট্রোল জেনারেল অব ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই) দুটি ভ্যাকসিন প্রয়োগের বিষয়ে সবুজ সংকেত দিয়েছে তার মধ্যে একটি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত কোভিশিল্ড এবং অন্যটি স্থানীয় সংস্থা ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, করোনা ভ্যাকসিনের বিষয়ে অন্যান্য দেশকে সহায়তা করার জন্য যে প্রতিশ্রুতি ও পরিকল্পনা দেওয়া হয়েছে সেখান থেকে বিচ্যুত হয়নি ভারত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বিবিসিকে আরও বলেন, ভ্যাকসিন প্রয়োগ করার পনেরো দিনের মধ্যে কিছু ডোজ দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশে রফতানির অনুমতি দেব। এর মধ্যে কয়েকটি চালান আমরা উপহার হিসেবে প্রদান করবো। অন্যগুলো ভারত সরকারের প্রায় কেনা দামেই রফতানি করার অনুমতি দেওয়া হবে।
ভারত প্রতিবেশী এবং বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক হিসেবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এ সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ বলেছেন, ভারত চলতি মাসের মাঝামাঝি নাগাদ কোভিড -১৯ ভ্যাকসিন প্রয়োগ করার পরিকল্পনা করছে।
তিনি দিল্লিতে সাংবাদিকদের বলেন, জরুরি ব্যবহারের অনুমোদনের তারিখের (৩ জানুয়ারি) পর থেকে ১০ দিনের মধ্যে ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু করবে।
এদিকে, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা ভ্যাকসিনের রফতানির বিষয়ে বিভ্রান্তি দূর করার চেষ্টা করেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আদর পুনাওয়ালা।
এর আগে গণমাধ্যমে আদর পুনাওয়ালাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছিল, যে ভারত কয়েক মাস তার ভ্যাকসিন রফতানি করতে দেবে না। তিনি বার্তাসংস্থা এপিকে বলেছিলেন তার সংস্থা ভ্যাকসিন রফতানি এবং বেসরকারি বাজারে এই ভ্যাকসিন বিক্রি করতে পারবে না।
তবে তিনি বিবিসিকে আজকে বলেন, তার কোম্পানিকে ভ্যাকসিন রফতানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে এবং আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ, সৌদি আরব এবং মরক্কোর সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে পাবেন বলে আশা করেন।