আলাস্কায় বৈঠকের প্রথম দিনেই মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে চীনা কর্মকর্তারা বাগযুদ্ধে জড়িয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের নয়া প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে প্রথম দিনের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকের দিনটি উভয়পক্ষের তুমুল উত্তেজনার মধ্য দিয়েই কাটলো।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দুই প্রশাসন একে অপরকে তীব্র বাক্যবাণে কাবু করার চেষ্টা করে।
চীনা কর্মকর্তারাদের বরাত দিয়ে বিবিসি বলছে, মার্কিনিরা আসলে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তাদের দেশের সংঘর্ষকে উসকে দিচ্ছে। আর বাইডেন প্রশাসনের দাবি উঠে এসেছে, চীনারা আদতেই বাকিদের চমকে দিতে চাইছে। যাতে করে তারা নিজেদের সুবিধা সহজাতভাবে হাসিল করে নিতে পারে। এজন্যই তারা আলোচনায় বসেছে।
মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সময় থেকেই চীনাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক খারাপ যাচ্ছে।
আলাস্কার অ্যাংকরেজ শহরে এ বৈঠকটিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেইক সুলিভানসহ যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আর বেইজিংয়ের পক্ষের চীনা পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইয়াং জিয়েচি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ছিলেন।
শুরুতেই ব্লিংকেন বলেন, ‘তাঁর দেশ এ বৈঠকে শিনজিয়াং, হংকং, তাইওয়ান, যুক্তরাষ্ট্রে সাইবার হামলা, আমাদের মিত্রদের সঙ্গে অর্থনৈতিক জবরদস্তিসহ চীনের বিভিন্ন পদক্ষেপে সৃষ্ট উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা করবে। তাদের এসব পদক্ষেপের প্রত্যেকটিই বিশ্বকে স্থিতিশীল রাখার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় শৃঙ্খলার জন্য হুমকিস্বরূপ।’
যার জবাবে ইয়াং, যুক্তরাষ্ট্র সামরিক শক্তি ও আর্থিক আধিপত্যকে কাজে লাগিয়ে অন্য দেশগুলোকে দমিয়ে রাখছে বলে অভিযোগ ঠুকেছেন।
জাতীয় নিরাপত্তার ধারণার অপব্যবহারের মাধ্যমে মার্কিনিরা স্বাভাবিক বাণিজ্য ব্যবস্থাপনায় বাধা সৃষ্টি করছে এবং কিছু কিছু দেশকে ‘তারা’ চীন আক্রমণকে উসকে দিচ্ছে, বলেন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির এ পলিটব্যুরো সদস্য।
ইয়াং বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে মানবাধিকার হালত তো খুবই বাজে, দেশটিতে কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের রীতিমতো ‘কচুকাটা’ করা হয়।'
জবাবে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুলিভান বলেন, ‘ওয়াশিংটন আসলে বেইজিংয়ের সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে চায় না। তবে আমরা সবসময় আমাদের জনগণ, মিত্র ও নীতির পক্ষে দাঁড়াবো।’
ঘণ্টাব্যাপি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সামনে দুই পক্ষের এ শব্দ লড়াই চলেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
এরমধ্যেই মার্কিন প্রতিনিধি দল চীনাদের বিরুদ্ধে বৈঠকে দুই পক্ষের জন্য সূচনা বক্তব্যে দুই মিনিটের বেশি কথা না বলার যে নিয়ম ঠিক হয়েছিল, তা লংঘনের অভিযোগ আনেন।
তবে চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে দেশটির প্রতিনিধিরা বলেছেন, তারা নন, বরং বাইডেন প্রশাসন সময় বাড়তি নিয়েছেন।