রক্তাক্ত মিয়ানমার, নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত ১১৪

এশিয়া, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-28 17:58:43

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে আজই দেশটিতে সবচেয়ে বেশি রক্তাক্ত হয়েছে। শনিবার (২৭ মার্চ) দেশটিতে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১১৪ জন বিক্ষোভকারী।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ দেশটির সশস্ত্র বাহিনী দিবস। এই দিনটিকে বিক্ষোভকারীরা দেশটির সশস্ত্রবাহিনীর জন্য লজ্জা দিবস বলে আখ্যায়িত করেছেন। 

খবরে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। মিয়ানমারজুড়ে বিভিন্ন শহরে এই নিহতের ঘটনা ঘটেছে। ইয়াঙ্গুন, মান্দালয় ও অন্যান্য শহরে সেনাবাহিনীর ‘মাথায়, পিঠে গুলিবিদ্ধ’ হওয়ার হুমকি উপেক্ষা করে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাস্তায় নামেন।

মিয়ানমার নাউ সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শনিবার রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে ১১৪ জন নিহত হয়েছেন। মান্দালয়ে নিহত ২৯ জনের মধ্যে একজনের বয়স ৫ বছর। ইয়াঙ্গুনে নিহত হয়েছেন ২৪ জন।

দালা নামক উপশহরে স্থানীয় থানার কাছে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হন চারজন। এখানে কমপক্ষে ১০ জন আহত হন। ইনসেইন শহরে গুলিতে নিহত হন তিনজন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন মিয়ানমারের অনূর্ধ্ব-২১ ফুটবল দলের সদস্য ছিলেন বলে জানা গেছে।

মধ্যাঞ্চলীয় মিংগিয়ান শহরে গুলিতে মারা গেছেন অন্তত দুই বিক্ষোভকারী। এখানে বিক্ষোভে অংশ নেন থু ইয়া জাউ। তিনি বলেন, ‘তারা (জান্তা) পাখির মতো নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছে। তবে আমরা বিক্ষোভ চালিয়ে যাব। জান্তা সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত এই বিক্ষোভ চলবে।’

সশস্ত্র বাহিনী দিবসে এই হত্যাকাণ্ড পশ্চিমা দেশগুলি তীব্র সমালোচনা করেছে।

মিয়ানমারে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত ড্যান চুগ এক বিবৃতিতে বলেছেন, নিরাপত্তা বাহিনী নিজেদের লাঞ্ছিত করেছে এবং মার্কিন রাষ্ট্রদূত এই সহিংসতাকে ভয়াবহ বলে অভিহিত করেছে।

সামরিক উড়োজাহাজগুলি কারেন জাতিগত সংখ্যালঘুদের একটি অঞ্চলে বিমান হামলা চালালে কমপক্ষে দু'জন নিহত হয়ে বলে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।

এর আগে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাজধানী নেপিডোয় একটি সামরিক কুচকাওয়াজে মিয়ানমার সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং কোনও সময়সীমা না দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান বলেন, সেনাবাহিনী গোটা দেশকে গণতন্ত্র রক্ষার জন্য একত্রিত করতে চায়। তিনি আরও বলেন, সেনাবাহিনী দেশজুড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।

আজ সশস্ত্র বাহিনীর জন্য লজ্জা দিন। তিনশর বেশি নিরাপরাধ বেসামরিক মানুষকে হত্যার পর সামরিক বাহিনীর জেনারেলরা সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালন করছেন, একটি অনলাইন ফোরামে এমনটাই বলেছেন ক্ষমতাচ্যুত আইনপ্রণেতাদের জান্তাবিরোধী গোষ্ঠী সিআরপিএইচের মুখপাত্র ড. সাসা।

উল্লেখ্য, গত ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চির সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এরপর থেকেই দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভকারীরা সু চির মুক্তির পাশাপাশি বেসামরিক কর্তৃপক্ষের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। এসব বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৪০০ জনের কাছাকাছি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর