জনসন অ্যান্ড জনসনের তৈরি করোনার টিকা ব্যবহারে কিছু মানুষের দেহে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার অভিযোগে এর প্রয়োগ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে এফডিএ (মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন) ও সিডিসি (যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন)।
মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) অবিলম্বে এই টিকার প্রয়োগ বন্ধ করতে বলে সংস্থা দুটি। নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি বলছে আগাম সতর্কতা হিসেবে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে ছয় ব্যক্তির দেহে জনসনের তৈরি করোনার টিকা দেওয়ার পর রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। রক্ত জমাট বাঁধা ছয় নারীর বয়স ১৮ থেকে ৪৮ বছরের মধ্যে। এর মধ্যে একজন মহিলা মারা গেছেন, একজন গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এফডিএ জানিয়েছে, দেশটির রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) এবং তারা মিলে মোট ছয়টি ঘটনা পর্যবেক্ষণ করছে। এসব ঘটনায় টিকাটি গ্রহণের পর বিরল এবং মারাত্মক ধরনের রক্ত জমাট বেঁধে যেতে দেখা গেছে। এই মুহূর্তে এসব বিরূপ প্রতিক্রিয়া চরম বিরল বলে দেখা যাচ্ছে। টুইট বার্তায় বলা হয়েছে, আগাম সতর্কতা হিসেবে আমাদের সুপারিশ হলো টিকাটি ব্যবহার স্থগিত রাখা হোক।
এফডিএ এবং সিডিসির এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রক্ত জমাট বাঁধার এই ঘটনাটি হলো চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় সেরেব্রাল ভেনাস সাইনাস থ্রমবোসিস বা সিভিএসটি। মস্তিষ্ক থেকে পরিবহনের নালীতে রক্ত জমাট বাধার ঘটনা বোঝাতে এই টার্মটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই ধরনের রক্ত জমাট বাধার চিকিৎসার জন্য প্রচলিত ব্যবস্থার চেয়ে আলাদা ধরনের চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে। রক্ত জমাট বাধার চিকিৎসায় হেপারিন নামে পরিচিত একটি ওষুধ ব্যবহার হলেও এই ধরনের বিরল ক্ষেত্রে ওই ওষুধের ব্যবহারের পরিণতি মারাত্মক হতে পারে জানানো হয়েছে ওই বিবৃতিতে।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বলেছিল, কিছু ক্ষেত্রে যেসব ব্যক্তির দেহে প্লাটিলেটের সংখ্যা কম থাকে, তাদের দেহে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার ঘটনা ঘটতে দেখা যাচ্ছে। তবে এ ঘটনা নানা শারীরিক ত্রুটির কারণে হয়ে থাকতে পারে। এ বিষয়ে আরও গবেষণা ও পর্যালোচনার প্রয়োজন।
দেশটির রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রসমূহের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় সাত মিলিয়ন মানুষ জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা নিয়েছেন এবং প্রায় নয় মিলিয়ন ডোজ দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে প্রেরণ করা হয়েছে।