বিশ্বজুড়ে মহামারি করোনার হালনাগাদ তথ্য প্রদানকারী ওয়েবসাইট করোনাভাইরাস ওয়ার্ল্ডোমিটার বলছে, মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বে এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১৪ কোটি ২৭ লাখ ২৩ হাজার ৯১৮ জন এবং করোনায় এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৩০ লাখ ৪৩ হাজার ৫৯১ জন। এসব তথ্য-পরিসংখ্যানে প্রাপ্ত চিত্র করোনার দ্রুত গতিবেগ বৃদ্ধির প্রমাণবহ।
কারণ, করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ১০ লাখে পৌঁছাতে সময় লেগেছিল ৯ মাস। তারপর এই সংখ্যা ২০ লাখে পৌঁছাতে সময় লেগেছে ৪ মাস এবং তারপরের ৩ মাসে করোনায় বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৩০ লাখে।
প্রাপ্ত তথ্য-পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, কেবলমাত্র ২০২১ সালের এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫২ লাখ মানুষ; গতবছর মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত এক সপ্তাহে সংক্রমণের হিসেবে এটি সর্বোচ্চ আক্রান্তের রেকর্ড। গত ২০১৯ সালে যখন মহামারি শুরু হয়, দেখা গেছে ৫০ বছর বা তার অধিক বয়সী মানুষ বেশি ঝুঁকিতে ছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, ২০-২৫ বছর বয়সী তরুণীরাও উল্লেখযোগ্য হারে আক্রান্ত হচ্ছেন এই ভাইরাসে।
করোনা প্রতিরোধে বিভিন্ন দেশে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, উন্নত দেশগুলোতে প্রতি চারজনে একজন টিকা নিয়েছেন, অন্যদিকে নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে প্রতি ৫০০ জনে টিকা নিয়েছেন একজন।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরের সি ফুড মার্কেটে প্রথম শনাক্ত হয় প্রাণঘাতী সংক্রামক ভাইরাস সার্স-কোভ-২। যা পরে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পায় করোনাভাইরাস বা কোভিদ-১৯ নামে। প্রথমে সাধারণ নিউমোনিয়া মনে করা হলেও পরবর্তীতে করোনাভাইরাসে আলাদা ধরণ ও ক্ষতিকর দিকগুলো গবেষণার মাধ্যমে দেখতে পাওয়া যায় এবং বিশ্বব্যাপী মহামৃত্যুর ভয়াল চিত্রের মাধ্যমেও প্রতিফলিত হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে উদ্ভব হলেও ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া শুরু করে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসটি। এক পর্যায়ে সে বছর ফেব্রুয়ারিতে করোনাকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করতে বাধ্য হয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। একই বছরের ডিসেম্বর থেকে করোনার বিরুদ্ধে টিকাকরণের কাজও শুরু হয়। কিন্তু ২০২১ সালের সূচনায় স্বল্পদিন নিম্নগতি থাকার পর নতুন নতুন ধরণের মাধ্যমে করোনা পুনরায় আগ্রাসী রূপ পরিগ্রহ করে এবং সমগ্র বিশ্ব আবার বিশেষ সতর্কতা ও বিধি-নিষেধের আওতায় চলে আসে।