নেপালকে জরুরি বিধিনিষেধ জারির আহ্বান

এশিয়া, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-21 10:24:23

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জেরে কার্যত ধুঁকছে গোটা নেপাল। অক্সিজেন, হাসপাতালে বেড, ওষুধের অপ্রতুলতা প্রকট হয়ে উঠছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির সরকারকে জরুরি বিধিনিষেধ জারির আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

সোমবার (১০ মে) নিউইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক এই মানবাধিকার সংস্থা এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানায়।

বিবৃতিতে সংস্থাটি নেপাল সরকারকে সহায়তার জন্য বিদেশি দাতাদের বোতলজাত অক্সিজেন, ভেন্টিলেটর এবং জরুরি চিকিৎসা সামগ্রী দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নেপালে প্রতি তিন দিন অন্তর সংক্রমণের সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ায় দেশেটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে।

নেপাল গত কয়েকদিন ধরে প্রতিদিন ৮ হাজারেরও বেশি নতুন করোনভাইরাস সংক্রমণের খবর পাওয়া যাচ্ছে, যা এ বছরের মার্চ থেকে তীব্র বৃদ্ধি পেয়েছে। সোমবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ১৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, করোনায় নেপালের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে। তাই দেশটিতে কোভিড -১৯ বিপর্যয় এড়াতে জরুরি ভিত্তিতে বড় পরিমাণে অক্সিজেন সরঞ্জাম এবং অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ করা দরকার।

সোমবার (১০ মে) পর্যন্ত দেশটিতে ৪ লাখ ৩ হাজার ৭৯৪ জনের দেহে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।

দেশটির একজন চিকিৎসকের বরাত দিয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, নেপালে মানুষ অক্সিজেন ও হাসপাতালের সুযোগ-সুবিধার অভাবের কারণে আক্ষরিক অর্থে মারা যাচ্ছে।

দেশটির কর্মকর্তা ও চিকিৎসকদের বক্তব্য উদ্ধৃত করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে, কোভিড -১৯ মহামারির দ্বিতীয় তরঙ্গের বিষয়ে নেপাল সরকারের প্রতিক্রিয়া ধীর এবং দুর্বলভাবে পরিচালিত হয়েছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছে, নেপালে জরুরি চিকিৎসার জন্য ওষুধ সরবরাহ করা দরকার। যেমন রেমডিসিভির, অক্সিজেন টিউব, মাস্ক, ভেন্টিলেটর এবং অন্যান্য ওষুধ। নেপালে প্রায় ৫৬০টি ভেন্টিলেটর রয়েছে, যা দাতা সংস্থার হিসাব অনুসারে প্রয়োজনের অর্ধেকেরও কম।

নেপাল গত ২৭ জানুয়ারি থেকে ভারতে সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি কোভিশিল্ডের এক মিলিয়ন ডোজ নিয়ে টিকা দেওয়ার অভিযান শুরু করেছিল। অনুদান সহায়তায় ভারত সরকার বিনামূল্যে এই ভ্যাকসিন সরবরাহ করেছিল। নেপাল ফেব্রুয়ারিতে ২ মিলিয়ন ডোজ দেওয়ার জন্য একটি অর্ডার দেয়, তবে সেরাম ইনস্টিটিউট অর্ডারের অর্ধেক সরবরাহ করেছিল। বাকি ডোজগুলি আসেনি, এগুলো কবে আসবে তারও কোনও সম্ভাবনা নেই।

অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন ছাড়াও, নেপাল ভারত বায়োটেকের কোভাক্সিন, চীনের সিনোফার্ম এবং রাশিয়ার স্পুটনিক-৫- জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে।

ভ্যাকসিন পাওয়ার হাউস হিসেবে চিহ্নিত ভারতকে নেপালের অতিরিক্ত নির্ভরতায় এখন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন দেশটি অন্য কোনও দেশ থেকে নতুন চালান পাচ্ছে না।

এ সম্পর্কিত আরও খবর