রোহিঙ্গাদের প্রতি একাত্মতা জানাচ্ছেন মিয়ানমারের জনগণ

এশিয়া, আন্তর্জাতিক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-27 22:13:16

মিয়ানমারে দখলদার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে সাদা-কালোর একটি ক্যাম্পেইন, যেখানে রোহিঙ্গাদের অধিকার রক্ষার বিষয়টিও উঠে এসেছে। এরই মধ্যে এই ক্যাম্পেইনটি ভাইরাল হয়েছে ফেসবুক, টুইটারসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

কালো পোশাক পরে এবং রোববারকে কালো দিন বলে অভিহিত করে এই ক্যাম্পেইনটি চলছে। যা চলমান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সবচেয়ে ভাইরাল হওয়া ক্যাম্পেইন বলে মনে করা হচ্ছে।

গত ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে দেশটির রাজনৈতিক নেত্রী অং সান সু চিকে আটকের পর থেকে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে আন্দোলন জোরদার হচ্ছে। আর এবার তার সঙ্গে যোগ হলো রোহিঙ্গার মতো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকারের বিষয়টি।

সেনা নিপীড়নের প্রেক্ষিতে বেশিরভাগ রোহিঙ্গা মুসলিম এরই মধ্যে পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশে চলে আসতে কার্যত বাধ্য হয়েছেন। কয়েক দশক ধরে নাগরিকত্ব, অধিকার, সেবা পাওয়ার সুবিধা এবং চলাচলের স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত তারা। ‌

গত রোববার (১৩ জুন) মানবাধিকার কর্মী এবং দেশটির নাগরিকরা কালো পোশাক পরেন এবং তিন আঙুলের স্যালুট চিহ্নের মাধ্যমে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি পোস্ট করেন এবং #Black4Rohingya হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেন।

থিনজার সুনলেই নামের একজন অধিকারকর্মী তার টুইটারে লেখেন, ‘মিয়ানমারের সবাই সুবিচার পাওয়ার অধিকার রাখে এবং পেতে হবে।’

এছাড়াও স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা মিয়ানমারের বাণিজ্যিক শহর ইয়াঙ্গুনে একটি ছোট পরিসরে প্রতিবাদ জানায়। কালো পোশাক পরে এবং তিন আঙুলের চিহ্নের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয়, ‘রোহিঙ্গা নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।’

বিকেলের মধ্যে মিয়ানমারে #Black4Rohingya হ্যাশট্যাগটি ১ লাখ ৮০ হাজার বার উল্লেখিত হয়েছে টুইটারে।

রোববারের এই ঘটনায় বার্মিজ জনগোষ্ঠীর বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ পরিলক্ষিত হয়। অথচ মিয়ানমারে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার করাও এক ধরনের অপরাধ বা নিষিদ্ধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

২০১৭ সালে এক রক্তক্ষয়ী সামরিক অভিযানের ফলে মিয়ানমারের পশ্চিম সীমান্ত থেকে প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে হয়। যারা ধর্ষণ, গণহত্যা এবং অগ্নিসংযোগের শিকার হন।

এরপর দীর্ঘ সময় ধরে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং দেশটির রাজনৈতিক নেত্রী অং সান সু চি উভয়ই এই গণহত্যার বিষয়টি অস্বীকার করে আসছিলেন এবং জাতিসংঘের আদালতেও বিষয়টি উত্থাপিত হয়।

মিয়ানমারের সাধারণ জনতাকে নিপীড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিষয়ে কখনোই খুব বেশি চিন্তিত বোধ হয়নি। এমনকি দেশটির অধিকারকর্মী এবং সাংবাদিকরাও বিশ্বাস করতো না। রোহিঙ্গা অধিকারকর্মী রো নায় সান লুইন বার্তা সংস্থা এএফপি'কে বলেন, অনেক বছর ধরেই অনলাইন ক্যাম্পেইনের চেষ্টা করা হচ্ছিল। তবে রোববারেই প্রথমবারের মতো কোন ক্যাম্পেইন ভাইরাল হলো। এটা দেখে খুবই ভালো লাগছে যে মিয়ানমারের মানুষ এই বিষয়ে সচেতন হয়েছেন এবং অংশ নিচ্ছেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর