জাতিসংঘের শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর সতর্ক করে বলেছেন, আফগানিস্তানে কমপক্ষে ১০ লাখ শিশু চলতি বছর তীব্র অপুষ্টিতে ভুগবে এবং যথাযথ চিকিৎসা ছাড়াই মারা যেতে পারে।
সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) আফগানিস্তানে মানবিক সঙ্কট নিয়ে জাতিসংঘের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে হেনরিয়েটা ফোর বলেন, আফগানিস্তানের প্রায় এক কোটি শিশু মানবিক সহায়তা পেয়ে থাকে। আর এই সহায়তায়ই বেঁচে থাকার ব্যবস্থা হয় তাদের।
কিন্তু গত মাসে আফগানিস্তানে মার্কিন সমর্থিত সরকার কার্যত রাতারাতি ভেঙে পড়ার পর এবং তালেবান জঙ্গিরা দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর ভোগান্তি আরও বাড়বে বলে আফগান শিশুদের সাহায্য করতে আন্তর্জাতিক মহল ও বিশ্বের ধনী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। হেনরিয়েটা বলেন, দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন।
গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। এর আগে আফগান সরকারকে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা অর্থ সাহায্য দিয়েছে। কিন্তু তালেবান ক্ষমতায় আসার পর দেশটিকে দেওয়া সাহায্য বন্ধ করে দেয় আন্তর্জাতিক মহল। মূলত মানবাধিকার ও নারী অধিকার ইস্যুতে তালেবানের যে অবস্থান, তা বদলাতেই এ চাপ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এর প্রভাব পড়ছে সাধারণ আফগানদের ওপর।
ইতিমধ্যে দেশটিতে ইউনিসেফের মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো তালেবান সরকারকে পাশ কাটিয়ে আফগানিস্তানের নাগরিকদের সাহায্য পৌঁছে দিতে পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে অতিরিক্ত ৬ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলারের মানবিক সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনারের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে প্রদান করা হবে।
ফোর বলেন, এই বছর সংঘর্ষের কারণে প্রায় ৬ লাখ মানুষ, যাদের অর্ধেকেরও বেশি শিশু, বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
ফোর বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলির মধ্যে একটিতে কাজ করার জন্য ইউনিসেফের অনন্য ক্ষমতার ওপর জোর দেন।
তিনি আরও বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত ও দরিদ্র দেশে কীভাবে কাজ করতে হয়, সেই মৌলিক সক্ষমতা ইউনিসেফের রয়েছে।