প্রতি বছরে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ওঠে এমন দিনের সংখ্যা ১৯৮০'র দশকের তুলনায় এখন দ্বিগুণ বেড়েছে বলে বিবিসির এক বিশ্লেষণে বলা হচ্ছে। সাধারণত মধ্যপ্রাচ্য এবং উপসাগরীয় অঞ্চলেই তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়ে থাকে। উচ্চ তাপমাত্রা মানুষ এবং পরিবেশ উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর। এছাড়া উচ্চ তাপমাত্রা দালানকোঠা, রাস্তাঘাট এবং পাওয়ার সিস্টেমেরও ক্ষতিসাধন করতে সম্ভব।
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল চেইঞ্জ ইন্সটিটিউটের সহযোগী পরিচালক ডক্টর ফ্রিডরিক অটো বলেছেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধির এই প্রবণতার কারণ হিসেবে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধিকে ১০০ শতাংশ দায়ী করা যায়।
বিবিসির বিশ্লেষণে বলা হয়, ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২২ ডিগ্রি ফারেনহাইট) তাপমাত্রা ওঠে এমন দিনের সংখ্যা ১৯৮০'র পর থেকে প্রতি দশকেই বৃদ্ধি পেয়েছে। গড়ে ১৯৮০ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত বছরে ১৪ দিন তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে। ২০১০ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত প্রতি বছরে এ সংখ্যা ছিল বছরে ২৬ দিন। একই সময়ের মধ্যে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি বা তার চেয়ে বেশি উঠেছিল এমন দিনের সংখ্যা প্রতি বছর গড়ে অন্তত দু'সপ্তাহ করে বেড়েছে।
এই গ্রীষ্মে ইতালি (৪৮.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ও ক্যানাডায় (৪৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস) রেকর্ড তাপমাত্রা পরিলক্ষিত হওয়ার পর বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন যে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার না কমালে বিশ্বের অন্যান্য জায়গাতেও ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর তাপমাত্রা অনুভূত হতে পারে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের জলবায়ু বিষয়ক গবেষক ডক্টর সিহান লি বলেছেন, আমাদের দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। যত দ্রুত আমরা (ক্ষতিকর গ্যাস) নির্গমন কমাতে পারবো, ততই আমাদের জন্য ভালো। নির্গমন অব্যাহত থাকলে ও তা কমানোর লক্ষ্যে পদক্ষেপ না নেয়া হলে যে এই উচ্চ তাপমাত্রার ঘটনা শুধু বাড়তেই থাকবে, তা-ই নয়, জরুরি পদক্ষেপ এবং পুনরুদ্ধার কার্যক্রমও ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়বে।
বিবিসি'র বিশ্লেষণে জানা গেছে যে, সাম্প্রতিক দশকে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১৯৮০ থেকে ২০০৯ এর তুলনায় ০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে তাপমাত্রার এই বৃদ্ধি বিশ্বের সব অঞ্চল থেকে যে একই রকম ভাবে অনুভূত হবে, তা নয়। পূর্ব ইউরোপ, আফ্রিকার দক্ষিণাংশ এবং ব্রাজিলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার বৃদ্ধি হয়েছে ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি, আর উত্তর মেরুর কিছু অঞ্চলে এবং মধ্য প্রাচ্যে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বৃদ্ধি হয়েছে।