ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর আগ্রাসন শুরুর পর দেশটি ছেড়ে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন ২০ লাখ মানুষ। এর মধ্যে প্রায় আট লাখ শিশু। শিশুদের নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। খবর বিবিসির।
সংস্থাটি বলছে, যেসব শিশুরা মাতৃভূমি ছেড়ে শরণার্থী হিসেবে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে, তাদের অনেকে পরিবার ছাড়াই সেখানে রয়েছে। পরিবার ও নিজের ঘর ছেড়ে একাই দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে সীমান্ত পার হয়েছে। ফলে এসব শিশুদের মানসিক অবস্থা চরমভাবে বিপর্যস্ত।
সেভ দ্য চিলড্রেনের ইরিনা সাগোইয়ান বলেন, ‘সন্তানকে বাঁচাতে বাবা-মা মরিয়া। তাদের বাঁচাতে অভিভাভবকরা হৃদয়বিদারক বিভিন্ন পথ বেছে নিয়েছেন। নিজেদের বাড়িঘর রক্ষার জন্য তারা দেশে অবস্থান করছেন। তবে শিশুদেরকে তারা প্রতিবেশী ও বন্ধুদের সঙ্গে ইউক্রেনের বাইরে পাঠিয়ে দিচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘গতকালও এমন একটি ঘটনা ঘটেছে। প্রাণ বাঁচাতে হাসান নামে ১১ বছর বয়সী এক শিশু একাই জাপোরিঝিয়া শহরের ঘর ছাড়ে। কারণ তার মা তার দাদিকে বাড়িতে একা রেখে ঘর ছাড়তে রাজি হননি। প্রায় এক হাজার ২০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সে নিরাপদে স্লোভাকিয়াতে পৌঁছে। দুটি ছোট ব্যাগ, পাসপোর্ট হাতে আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে বেরিয়ে পড়েছিল সে। তার হাতের ওপরের অংশে মোবাইল নম্বর লেখা ছিল।’
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনের উদ্বাস্তুদের বড় অংশ এখন পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি এবং স্লোভাকিয়ায় পাড়ি জমাচ্ছেন। সীমান্ত পাড়ি দিয়ে হাঙ্গেরিতে প্রায় ১ লাখ ৯১ হাজার ৩৫০ জন, স্লোভাকিয়ায় ১ লাখ ৪০ হাজার ৭৪৫ জন, মলদোভা ও রোমানিয়া ৮২ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এছাড়া অনেক ইউক্রেনীয় রাশিয়ায় ঢুকে পড়েছেন। অনেকে আবার ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমিয়েছেন।