শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক গোলযোগের মধ্যে পড়ে নাভিশ্বাস উঠে গেছে সাধারণ মানুষের। খাদ্যপণ্যের আকাশচুম্বী দাম, লোডশেডিং, জ্বালানি তেলের সংকট, পানি সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে দেশটিতে। দৈনন্দিন জীবনযাপন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের। এর মাঝে দেশটির চিকিৎসকরা সতর্ক বার্তা দিলেন, হাসপাতালের সব জরুরি ওষুধ শেষ হয়ে আসছে, শিগগির বন্ধ হতে চলেছে জরুরি অপারেশন কার্যক্রম।
দেশটির মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (এসএলএমএ) জানিয়েছে, হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার জন্য জরুরি বিদেশি ওষুধ ও সরঞ্জাম পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে রুটিন সার্জারিও আর করা যাচ্ছে না। যা অবস্থা, তাতে কিছুদিনের মধ্যেই জরুরি প্রয়োজনে সার্জারিও বন্ধ করে দিতে হবে।
তারা আরও জানায়, আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে কে চিকিৎসা পাবে এবং কে পাবে না। সংগঠনটির তরফে দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসেকে চিঠি দিয়ে আরও জানানো হয়েছে, যদি কয়েক দিনের মধ্যে সরবরাহ স্বাভাবিক করা না যায়, তবে মহামারির থেকে আরও খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হবে।
এদিকে, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের সামনে দুইদিন ধরে বিক্ষোভ করছে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যেও বিক্ষোভকারীরা অবস্থান নিয়েছেন সেখানে। তাদের দাবি, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসেকে ইস্তফা দিতে হবে।
আগামীতে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে আর্থিক সম্ভাবনার অন্যতম দেশ হতে পারতো দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। কিন্তু তেমনটি না ঘটে বরং ফল হয়েছে উল্টো। দিন দিন বেড়েছে ঋণের বোঝা। ভেঙে পড়েছে দেশটির অভ্যন্তরীণ বাজার ব্যবস্থা।
চা উৎপাদনে অগ্রগণ্য, শিক্ষিত জনগণ, পর্যটনখাতে বিপুল পরিমাণ আয়, তা সত্ত্বেও কেন শ্রীলঙ্কার এমন আর্থিক পরিণতি তার জন্য এককভাবে কোনো কারণকে দায়ী করা মুশকিল। শ্রীলঙ্কার নাগরিকরা বলছেন, ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর এমন বিপর্যয়ের মুখে পড়েনি দেশটির অর্থনীতি।