ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের জেরে দেশটির ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। তার ফলে রুশ অর্থনীতি ধাক্কা খেলেও ইউরোপ থেকে মস্কোর মূল আয়ের পথ বন্ধ হয়নি। জ্বালানি তেল ও গ্যাস বিক্রি করে প্রতিদিন কোটি কোটি ইউরো পাচ্ছে ভ্লাদিমির পুতিনের সরকার। ইউক্রেন বার বার রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানির ওপর ঢালাও নিষেধাজ্ঞার ডাক দিলেও সেই প্রশ্নে ইউরোপে ঐকমত্য অর্জন করা সম্ভব হচ্ছিল না। তবে এবার রাশিয়ার দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি তেল আমদানি নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে একমত হয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা।
স্থানীয় সময় সোমবার (৩০ মে) বিকেলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭ সদস্য রাষ্ট্র এ বিষয়ে একমত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রধান চার্লস মিশেল বলেছেন, এই চুক্তির ফলে রাশিয়ার অর্থনীতির বিশাল একটি উৎস বন্ধ করে দেবে।
তিনি আরও বলেন, ইইউ রাশিয়ার বৃহত্তম সবারব্যাংক এবং তিনটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সম্প্রচার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে পদক্ষেপে নিতেও সম্মত হয়েছে।
ইইউ সদস্যরা রাশিয়ার তেল আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তাদের মতভেদ নিরসনের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলোচনা করেছে। ইউরোপের দেশ হাঙ্গেরির কারণে মূলত নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজটি আটকে যেতে বসেছিল। দেশটি জানিয়েছে, রুশ তেলে নিষেধাজ্ঞা দিলে তাদের অর্থনীতি ধসে পড়বে। কারণ রাশিয়ার বিকল্প কোনো দেশ এখনো পাওয়া যায়নি। স্লোভাকিয়া ও চেক রিপাবলিকও একই ধরনের উদ্বেগ প্রকাশ করে।
ইউক্রেন ইস্যুকে কেন্দ্র করে পশ্চিমাদের সঙ্গে রাশিয়ার উত্তেজনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। এরই মধ্যে রুশ হুমকি উপেক্ষা করে ন্যাটোতে যোগ দিতে আনুষ্ঠানিক আবেদন করেছে ফিনল্যান্ড ও সুইডেন।
মিশেল সাংবাদিকদের বলেন, ইইউতে পাইপলাইনের মাধ্যমে আসা তেল আপাতত বন্ধ হচ্ছে না। তবে রাশিয়া থেকে সমুদ্র পথে আসা আমদানি করা মোট তেলের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি তেল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাহী শাখার প্রধান উরসুলা ভন ডার লেইন বলেছেন, শাস্তিমূলক পদক্ষেপ হিসেবে বছরের শেষ নাগাদ রাশিয়া থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রায় ৯০ শতাংশ তেল আমদানি কার্যকরভাবে কমিয়ে দেবে।