ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী অর্পিতা মুখার্জির বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে ১৮ ঘণ্টার অভিযান শেষ হয়েছে। ইডি সূত্রে খবর, ১৮ ঘণ্টার অভিযানে ওই ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে ২৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এছাড়াও, মিলেছে প্রায় ৫ কেজির বেশি সোনা। যার মূল্য প্রায় আড়াই কোটি টাকা।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, রাতভর গোনা হয়েছে টাকা। অর্পিতার ফ্ল্যাটে শোওয়ার ঘর ও শৌচাগার থেকে এই বিপুল পরিমাণ টাকা ও সোনা উদ্ধার হয়েছে বলে ইডি সূত্রে দাবি। মোট ৭টি ট্রাঙ্কে টাকা ও একটি ট্রাঙ্কে সোনা বোঝাই করে নিয়ে যাওয়া হয়।
খবরে বলা হয়, বেলঘরিয়ায় উদ্ধার হওয়া টাকার পরিমাণ অর্পিতার টালিগঞ্জের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া ২২ কোটিকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। বেলঘরিয়ায় টাকার পরিমাণ ২৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা। যদিও ইডির পক্ষ থেকে এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি এখনো দেয়া হয়নি।
এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্পিতা মুখার্জির বাড়ি থেকে এখন পর্যন্ত ২০ কোটি রুপি নগদ অর্থ ও সোনার বার উদ্ধার করা হয়েছে। একটি শেলফে পাওয়া গেছে এসব অর্থ।
বুধবার (২৭ জুলাই) সকাল থেকে ইডি’র চারটি দল হানা দেয় পার্থ ও অর্পিতার যৌথ সম্পত্তিগুলোতে। কলকাতা লাগোয়া বেলঘড়িয়ায় অর্পিতার বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে চলে অভিযান। টাকার পরিমাণ এতটাই বেশি ছিল যে অত্যাধুনিক ক্যাশ কাউন্টিং জাম্বো মেশিন নিতে হয় ঘটনাস্থলে। গভীর রাত পর্যন্ত চলে অর্থ গণনা। ইডির অভিযানকে কেন্দ্র করে সেখানে ছিল উৎসুক জনতার ভিড়।
গত ২২ জুলাই টালিগঞ্জের একটি আবাসনে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে নগদ প্রায় ২২ কোটি টাকা, সোনার গয়না এবং বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করে ইডি। তার পর জানা যায়, বেলঘরিয়াতেও ফ্ল্যাট রয়েছে অর্পিতার। বুধবার সেখানেই অভিযান চালায় ইডি। বৃহস্পতিবার ভোর ৪টা নাগাদ টাকা গণনা শেষ হয়। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের কর্মীদের ডেকে এনে মোট চারটি বৃহদাকার যন্ত্রে চলছিল টাকা গোনা। কলকাতার এসবিআইয়ের একটি শাখা থেকে যন্ত্রগুলো বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে ইডি সূত্রে খবর। সাধারণত ওই যন্ত্র ব্যবহার হয় ‘কারেন্সি চেস্ট’-এ। ইডির একটি সূত্রের দাবি, প্রথমে পাঁচটি সাধারণ যন্ত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু টাকার পরিমাণ দেখে বড়মাপের যন্ত্র আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইডির ২৭ ঘণ্টা জেরার পর গ্রেফতার হন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তার বান্ধবী অর্পিতা মুখার্জি। এ ঘটনায় অস্বস্তিতে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস।