জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলীয় একটি গ্রামে কয়লা খনি বিরোধী এক বিক্ষোভ থেকে সুইডিশ পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গকে আটক করেছে দেশটির পুলিশ।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) তাকে আটক করা হয়। তবে তাকে গ্রেফতার করা হবে না বলে দেশটির পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
বুধবার (১৮ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
ঘটনাস্থলের একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে তিনজন অফিসার গ্রেটা থানবার্গকে বিক্ষোভ থেকে নিয়ে যাচ্ছেন তখন তিনি হাসছেন।
পশ্চিম জার্মানির লুয়েতজারাত গ্রামে কয়লা খনি সম্প্রসারণে কাজ চলছে। এতে ওই গ্রামটি ধ্বংস হয়ে যাবে বলে দাবি করে আসছেন পরিবেশ ও মানবাধিকার কর্মীরা। এর অংশ হিসেবে সেখানে প্রতিবাদ কর্মসূচি চলমান রয়েছে। তেমনটি একটি বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন গ্রেটা।
জার্মান পুলিশ বিবিসিকে জানিয়েছে, গ্রেটা থুনবার্গকে গ্রেফতার দেখানো হবে না। বরং ব্যক্তিগত পরিচয়পত্র (আইডি) যাচাই শেষে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিক্ষোভকারীদের একটি দল গাগসবাইলা-২ নামের ওই কয়লা খনির দিকে যাওয়ার সময় গ্রেটাকে তারা আটক করে। রয়টার্সকে পুলিশ জানিয়েছে, এক ব্যক্তি খনির ভেতরে লাফিয়ে পড়েছিলেন।
পুলিশের পক্ষ থেকে আরও নিশ্চয়তা দেওয়া হয় যে, গ্রেটার সঙ্গে আটক অন্যান্য ব্যক্তিদেরও ব্যক্তিগত পরিচয়পত্র যাচাই শেষে কোনো ধরনের অভিযোগ না দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হবে।
আন্দোলনকারী বলছে, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লা পোড়ানোয় গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে জার্মানির প্রচেষ্টাকে দুর্বল করবে। দেশটি ২০৩০ সালের মধ্যে খনিসমৃদ্ধ নর্থ রাইন-ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। জাতীয়ভাবে এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০৩৮ সাল।
লিগনাইট হল কয়লার মধ্যে সবচেয়ে নোংরা রূপ, লুয়েতজারাত গ্রামে এ কয়লাই বছরে পোড়ানো হয় আড়াই কোটি টন। এই গ্রামটি বর্তমানে জার্মান বহুজাতিক জ্বালানি কোম্পানি আরডব্লিউই-এর মালিকানাধীন।
ধারণা করা হচ্ছে, বাসিন্দারা গ্রাম ত্যাগের পরপরই লিগনাইট উত্তোলনের জন্য এলাকাটি ধ্বংস করা হবে। আরডব্লিউই বলছে, চলতি শীতের শুরুতেই তাদের এই গ্রামের মাটির নিচ থেকে কয়লা উত্তোলন করা দরকার।
দেশটির সরকার যুক্তি দিয়েছে শক্তির চাহিদা যোগাতে খনিটি সম্প্রসারণ করা দরকার। কারণ এখান থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ রাশিয়া থেকে গ্যাসের বাধা মোকাবিলা করে।
বিক্ষোভের আয়োজকরা বলেছেন প্রায় ৩৫ হাজার বিক্ষোভকারী অংশ নিয়েছিল। তবে পুলিশ জানিয়েছে সংখ্যা ১৫ হাজারের কাছাকাছি ছিল।