ইরানে হিজাব আইন লঙ্ঘন করার অভিযোগে কর্মকর্তাদের সাথে কথিত সংঘর্ষে কোমায় চলে যাওয়া কিশোরী আরমিতা গেরভান্ডকে ব্রেইন ডেড (মস্তিষ্ক অচলাবস্থা) বলেছে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। রবিবার (২২ অক্টোবর) রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, কুর্দি-ইরানি হেনগাও-এর মতো ডান গোষ্ঠীগুলোই সর্বপ্রথম আরমিতা গেরভান্ডের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তারা ১৬ বছর বয়সী মেয়েটির ছবি প্রকাশ করে। যেখানে তাকে একটি শ্বাসযন্ত্রের টিউব এবং তার মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়ে অচেতন অবস্থায় দেখা যায়।
আরমিতার স্বাস্থ্যের সর্বশেষ ফলোআপ অনুসারে চিকিৎসা কর্মীদের চেষ্টা সত্ত্বেও তার মস্তিষ্কের অচলাবস্থা নিশ্চিত হয়েছে বলে রাষ্ট্রীয় মিডিয়া জানিয়েছে।
এক্ষেত্রে আরমিতারও মাহসা আমিনির মতো একই পরিণতির হতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মানবাধিকার কর্মীরা। গত বছর ইরানের নৈতিক পুলিশের হেফাজতে মাহসা আমিনির মৃত্যু হয়। এতে দেশব্যাপী সরকার বিরোধী বিক্ষোভের জন্ম দেয় যা ইরানের শাসকদের জন্য সবচেয়ে সাহসী চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটি ছিল।
এর আগে গত ১ অক্টোবর তেহরানের মেট্রোতে বাধ্যতামূলক ইসলামিক ড্রেস কোড প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের সাথে সংঘর্ষে আরমিতা আহত হয়েছেন। কিন্তু ইরান সরকার তা অস্বীকার করেছে।
উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সালের বিপ্লবে ধর্মনিরপেক্ষ এবং পশ্চিমা-সমর্থিত শাহকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর ইরানের ধর্মতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান মহিলাদের পোশাকের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। আইন অনুসারে মহিলাদের তাদের চুল ঢেকে রাখা এবং লম্বা, ঢিলেঢালা পোশাক পরতে বাধ্য করা হয়েছে।
এই আইন লঙ্ঘনকারীরা জনসাধারণের তিরস্কার, জরিমানা বা গ্রেপ্তারের সম্মুখীন হয়। এ ঘটনায় কঠোর ইসলামিক ড্রেস কোডকে অমান্য করে আমিনির মৃত্যুর পর থেকে নারীরা সারা দেশে মল, রেস্তোরাঁ এবং দোকানের মতো পাবলিক প্লেসে উন্মোচিত হয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছে।