মিয়ানমারের সামরিক সরকার বলেছে, দেশটির বাহিনী সশস্ত্র গ্রুপগুলোর সঙ্গে গত কয়েক দিনের ভয়ানক লড়াইয়ের পরে চীন সীমান্তবর্তী একটি গুরুত্বপূর্ণ শহরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা দখলকারী জেনারেলদের জন্য ওই ক্ষতি একটি বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
মিয়ানমারের সামরিক সরকারের মুখপাত্র জাও মিন তুন বুধবার (১ নভেম্বর) বলেছেন, ‘চিনশওয়ে নামের ওই শহরে সরকার, প্রশাসনিক সংস্থা এবং নিরাপত্তা সংস্থাগুলো উপস্থিত নেই আর।’
চীনের ইউনান প্রদেশের সীমান্তবর্তী শহরটি মিয়ানমার থেকে চীনে বাণিজ্য প্রবাহের কেন্দ্রবিন্দু বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা।
চীনের সঙ্গে মিয়ানমারের ১.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সীমান্ত বাণিজ্যের চালানের এক-চতুর্থাংশেরও বেশি এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চিনশওয়ের মধ্য দিয়েই গেছে বলে জানিয়েছে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের উত্তর শান রাজ্যজুড়ে তায়াং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি, আরাকান আর্মি এবং মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি পরিচিত তিনটি জাতিগত বিদ্রোহী গ্রুপের একটি জোটের সঙ্গে লড়াইয়ে হার মানে দেশটির সেনাবাহিনী।
গণতন্ত্রকামী ওই তিনটি সশস্ত্র গ্রুপ, যা ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স নামে পরিচিত, তাদের ১৫ হাজার যোদ্ধা রয়েছে বলে বিশ্বাস করা হয়। গ্রুপগুলো স্বায়ত্তশাসন ও সম্পদের দাবিতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে নিয়মিত লড়াই করে চলেছে।
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে তারা বলেছে, তারা চীনের সঙ্গে মিয়ানমারের সংযোগকারী বেশ কয়েকটি সামরিক পোস্ট এবং মূল রাস্তা দখল করেছে। মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি গত সোমবার কিছু ভিডিও প্রকাশ করেছে।
ওই ভিডিওতে তারা চিনশওয়েহা শহরে তাদের সদস্যদের নিয়ন্ত্রণ দেখিয়েছে।
জাও মিন তুন নিশ্চিত করেছেন যে, গত সপ্তাহে শান রাজ্যজুড়ে ১০টি স্থানে লড়াই শুরু হয়। তিনি সশস্ত্র গ্রুপগুলোকে বিদ্যুৎ কেন্দ্র, সেতু উড়িয়ে দেওয়াসহ পরিবহন রুট ধ্বংস করার জন্য অভিযুক্ত করেছেন। এদিকে বিদ্রোহীরা বলেছে, তারা কয়েক ডজন সেনাকে হত্যা ও আহত করেছে।