মিয়ানমারে সামরিক জান্তা ও জাতিগত বিদ্রোহীদের চলমান লড়াইয়ের বহু থাইসহ ফিলিপিনো এবং সিঙ্গাপুরের নাগরিক আটকে পড়ে আছে। আটকে পড়াদের থেকে অন্তত ২৬৬ জনকে দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে থাইল্যান্ড।
রোববার (১৯ নভেম্বর) থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এই কথা বলা হয়েছে। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে সামরিক বাহিনী ও বিদ্রোহীদের লড়াইয়ে আটকে পড়া দুই শতাধিক থাই নাগরিককে দেশের ফেরানো হবে। এই নাগরিকদের মিয়ানমার থেকে প্রথমে চীন, পরে সেখান থেকে থাইল্যান্ডে ফিরিয়ে আনা হবে।
থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সহায়তায় ২৬৬ থাই নাগরিকসহ কিছুসংখ্যক ফিলিপিনো এবং সিঙ্গাপুরের নাগরিককে উত্তর শান রাজ্যের লাউকাইং থেকে মিয়ানমার-চীন সীমান্তে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
বিদেশিদের এই দলটিকে চীনে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। তারপর তারা চীনের কুনমিং শহর থেকে দুটি চার্টার্ড ফ্লাইটে ব্যাংককে যাবেন; যেখানে তাদের বিরুদ্ধে মানবপাচার এবং কোনও অপরাধমূলক অভিযোগের রেকর্ড আছে কি না তা যাচাই-বাছাই করা হবে।
মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে জাতিগত সংখ্যালঘু বিভিন্ন গোষ্ঠীদেরে উৎখাত করার জন্য দেশটির সামরিক জান্তারা তীব্র হামলা চালাচ্ছে। বিদ্রোহী ও জান্তা সৈন্যদের গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চলমান এই লড়াইয়ে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী কিছু সামরিক চৌকি ও স্থাপনার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। এছাড়া দেশটির হাজার হাজার বাসিন্দা প্রতিবেশি ভারতে পালিয়ে গেছেন।
এমনকি বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াইয়ে টিকতে না পেরে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীরও ৬০ জনের বেশি সদস্য ভারতের মিজোরামে পালিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতেই থাইল্যান্ড লড়াইয়ের মাঝে আটকে পড়া নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ।
তবে মিয়ানমার থেকে নিজ নাগরিকদের প্রত্যাবাসনের কাজে নিয়োজিত ফ্লাইটের সময় নির্দিষ্ট করে জানায়নি থাইল্যান্ড। তবে দলটি রোববার চীনা সীমান্তে পৌঁছাবেন বলে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত কয়েক দশক ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের জাতিগত সংখ্যালঘু ও অন্যান্য বিদ্রোহীগোষ্ঠীগুলোর সাথে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর লড়াই চলছে। তবে ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থান দেশটির জান্তাবিরোধী গোষ্ঠীগুলোর মাঝে নজিরবিহীন সমন্বয় তৈরি করেছে। যে কারণে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সাথে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে সামরিক বাহিনী সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। গত মাসের শেষের দিকে দেশটির জাতিগত সংখ্যালঘু তিনটি গোষ্ঠীর সদস্যরা জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে একযোগে সমন্বিত হামলা শুরু করে।