উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের অল্পবয়সি কন্যা তার সম্ভাব্য উত্তরসূরি বলে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি গোয়েন্দা সংস্থাকে উদ্ধৃত করে বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে নিউ ইয়র্ক টাইমস।
উল্লেখ্য, কিমের কন্যা কিম জু-এ প্রায়শই তার বাবার সঙ্গে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হাজির থাকেন।
তবে, নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে কিমের কন্যার নাম এবং বয়সসহ ব্যক্তিগত কোনও বিবরণ জানানো হয়নি। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা কিমের কন্যার নাম কিম জু-এ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা বলেছেন, জু-এ’র বয়স প্রায় ১০ বছর বলে মনে ধারণা করা হয়।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় মিডিয়া তাকে কিমের ‘সবচেয়ে প্রিয়’ বা ‘সম্মানিত’ সন্তান হিসেবে উল্লেখ করেছে। কারণ, দেশটির অনেক সামরিক জেনারেল এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা তার সামনে হাঁটু গেড়ে বসেছেন।
ওই দৃশ্যগুলোই বিশ্লেষকদের মধ্যে ব্যাপক জল্পনা সৃষ্টি করেছে যে, কন্যাকে তার পিতার উত্তরাধিকারী হিসাবে তৈরি করা হচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা বলেছেন, কিমের মৃত্যুর পর সম্ভবত উত্তর কোরিয়ায় কিম পরিবারের রাজবংশীয় শাসন অব্যাহত থাকবে। কিন্তু, তারা নিশ্চিত ছিলেন না কোন সন্তান তার স্থলাভিষিক্ত হবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তাদের মতে, জু-এ ছাড়াও কিমের আরও একটি ছেলে সন্তান আছে। কিন্তু বুদ্ধিমত্তা পরীক্ষায় জু-এ সবদিক থেকে এগিয়ে। এখনও পর্যন্ত তাই জু-এ’ই কিমের একমাত্র সন্তান, যে জনসমক্ষে উপস্থিত হয়েছে।
ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সদস্যের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত একটি মূল্যায়নে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি দাবি করেছে, “এখন পর্যন্ত কিম জু-এ’কে সবচেয়ে সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে দেখা হচ্ছে।”
নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ২০২২ সালের নভেম্বরে জু-এ’কে প্রথম প্রকাশ্য উপস্থিতিতে দেখা যায়, যখন তিনি তার বাবার সাথে একটি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা দেখেছিলেন।
এরপর থেকে তিনি কিমের সঙ্গে সব গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় ইভেন্টে তার বাবার সঙ্গে কেন্দ্রের মঞ্চ ভাগ করে নিয়েছেন তিনি।
গত রবিবার উত্তর কোরিয়ার টিভি ফুটেজে পিয়ংইয়ংয়ে নববর্ষের আগের উদযাপনে কিমকে তার মেয়েকে আলিঙ্গন ও গালে চুমু খেতে দেখা গেছে।
উত্তর কোরিয়া কোনো রাজতন্ত্র নয়, কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এর রাজবংশীয় নেতৃত্ব রয়েছে। এর শীর্ষ নেতাকে ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টি কংগ্রেসের মাধ্যমে নির্বাচিত করা হয়।
কিমের দাদা ও বাবা দুজনেই মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দেশটি শাসন করেছিলেন। ২০১১ সালে কিম জং-ইল মারা যাওয়ার পর দায়িত্ব নেন কিম।