মার্কিন সেনাদের দ্রুত প্রস্থান চায় ইরাক

মধ্যপ্রাচ্য, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম | 2024-01-10 19:47:53

ইরাক তার মাটি থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক বাহিনীর দ্রুত এবং সুশৃঙ্খলভাবে প্রস্থান চায়। কিন্তু, এক্ষেত্রে দেশটি সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয়নি।

ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানী বলেছেন, গাজা যুদ্ধের আঞ্চলিক উত্তেজনার মধ্যে মার্কিন সেনাদের উপস্থিতি অস্থিতিশীল হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের প্রস্থানের জন্য বেশিরভাগ শিয়া মুসলিম উপদলের দ্বারা বহুদিন ধরে চলে আসা আহ্বানগুলো ইরান-সম্পর্কিত গোষ্ঠীগুলোর উপর মার্কিন হামলার পর তীব্রতা লাভ করেছে।

গত মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) বাগদাদে এক সাক্ষাৎকারে সুদানী রয়টার্সকে বলেন, ‘পারস্পরিক সম্পর্ক পুনর্গঠন করার প্রয়োজন আছে।’

জোটের ভবিষ্যত সম্পর্কে চিন্তাভাবনার প্রথম বিশদ বিবরণ দিয়ে সুদানী বলেন, ‘বোঝাবুঝি এবং সংলাপের একটি প্রক্রিয়ার অধীনে প্রস্থানের আলোচনা হওয়া উচিত। আসুন আমরা একটি সময় ফ্রেমে (জোট থেকে বেরিয়ে আসার জন্য) একমত হই, যাতে ইরাকে মার্কিন সেনাদের অবস্থান দীর্ঘস্থায়ী না হয় এবং আক্রমণগুলো যেন আর না ঘটে।’

তিনি বলেন, ‘গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের অবসান হলেই আঞ্চলিক ঝুঁকির বৃদ্ধি থামবে। গাজা যুদ্ধের সমাপ্তিই এর একমাত্র সমাধান। অন্যথায়, আমরা বিশ্বের জন্য একটি সংবেদনশীল অঞ্চলে সংঘাতের ক্ষেত্রটির আরও সম্প্রসারণ দেখতে পাবো।’

বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন সেনা প্রত্যাহার ইরাকের শাসক অভিজাতদের উপর চিরশত্রু ইরানের প্রভাব সম্পর্কে ওয়াশিংটনের উদ্বেগ বাড়িয়ে দেবে। ২০০৩ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনের পর ইরান-সমর্থিত শিয়া গোষ্ঠীগুলো ইরাকে শক্তি অর্জন করে।

গত সোমবার পেন্টাগন বলেছে, তাদের সরকারের আমন্ত্রণে ইরাকে থাকা মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের কোনও পরিকল্পনা নেই ওয়াশিংটনের।

এনডিটিভি জানিয়েছে, ইরাক ওপেকের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী এবং দেশটি ইসরায়েলের গাজা অভিযানের তীব্র সমালোচকদের মধ্যে একটি।

ইরাক সরকার বারবার বলেছে, ইরাকে বিদেশী বাহিনী এবং কূটনৈতিক মিশনের উপর সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলা অবৈধ এবং তাদের দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে গেছে।

একই সময়ে গোষ্ঠীগুলোর দ্বারা ব্যবহৃত ঘাঁটিতে মার্কিন হামলার নিন্দা করেছে বাগদাদ। সেই সঙ্গে বাগদাদের কেন্দ্রস্থলে একজন সিনিয়র মিলিশিয়া কমান্ডারের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক হামলাকে সার্বভৌমত্বের গুরুতর লঙ্ঘন হিসাবে নিন্দা করেছে তারা।

সমালোচকরা বলছেন, কাতায়েব হিজবুল্লাহ এবং হারাকেট হিজবুল্লাহ আল-নুজাবাসহ সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সেস (পিএমএফ) মার্কিন বাহিনীর উপর আঘাত করার সময় তারা ইরাকে ইসলামিক প্রতিরোধের ব্যানারে চেইন অফ কমান্ডের বাইরে কাজ করে।

কিন্তু, যখন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশোধ নেয় তখন তারা পিএমএফের সদস্য হিসাবে তাদের ক্ষতির জন্য শোক প্রকাশ করে।

উল্লেখ্য, ২০০৩ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী ইরাক আক্রমণ করে দেশটির সাবেক নেতা সাদ্দাম হোসেনকে ক্ষমতাচ্যুত করে। ২০১১ সালে তারা ইরাক থেকে সেনা প্রত্যাহার করে।

তবে ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক জোটের অংশ হিসাবে ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ফের ইরাকে ফিরে আসে। বর্তমানে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ২,৫০০ সেনা রয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর