গাজায় অবিরাম বোমাবর্ষণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করেছে ইসরায়েল। এই হামলায় প্রতিবেশী গাজা ভূখন্ড একবারে সমতলে পরিণত হয়েছে এবং হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে।
ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক ও আইনজীবী ফ্রান্সেস্কা আলবানিজ বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) এই কথা বলেছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
আলবানিজ এমন সময় ওই মন্তব্য করলেন, যখন দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে ইসরায়েল একটি মামলার মুখোমুখি হয়েছে।
স্পেনের মাদ্রিদে এক সংবাদ সম্মেলনে আলবানিজ বলেন, ‘ইসরায়েল এমন অনেক কাজ করেছে যা অত্যন্ত বেআইনি, অত্যন্ত আইন লংঘনকারী। যদিও ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে, তবে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনকে অবশ্যই সম্মান করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘যে সকল লোক সক্রিয়ভাবে যুদ্ধে জড়িত নয়, অর্থ্যাৎ বেসামরিক, যুদ্ধবন্দী, অসুস্থ ও আহতদের রক্ষার্থে ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইন মানতে হবে।’
আলবেনিজ বলেন, ‘এর অর্থ হল যোদ্ধা এবং বেসামরিকদের মধ্যে পার্থক্য এবং বেসামরিকদের অত্যধিক ক্ষতি এড়াতে সামরিক আক্রমণগুলো সমানুপাতিকহারে নিশ্চিত করা উচিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘এর পরিবর্তে যা ঘটেছে তা হলো, অত্যন্ত জনাকীর্ণ এলাকায় ১০০ দিনের নিরলস বোমা হামলা, প্রথম দুই সপ্তাহে প্রতি সপ্তাহে ৬০০০ বোমা, ২ হাজার পাউন্ডের বোমাবর্ষণ।’
আলবেনিজ বলেন ‘বেশিরভাগ হাসপাতাল অকার্যকর করে দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রধান হাসপাতালগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কিংবা বোমা হামলা বা সেনাবাহিনী দখল করে নিয়েছে। মানুষ এখন শুধু বোমার কারণেই নয় বরং নিরাময়েরর জন্য পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য অবকাঠামো না থাকায় মারা যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন যেসব শিশুর এক বা দুটি অঙ্গ কেটে ফেলা হয় তাদের সংখ্যা খুবই উদ্বেগজনক। এই যুদ্ধের প্রথম দুই মাসে ১০০০ শিশুকে অ্যানাস্থেসিয়া ছাড়াই অঙ্গ কেটে ফেলা হয়েছে। এটা ছিল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।’
এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, ইসরায়েলের অবিরাম বোমাবর্ষণ এবং স্থল আক্রমণে কমপক্ষে ২৪,৬২০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এদের প্রায় ৭০ শতাংশই নারী, শিশু এবং কিশোর-কিশোরী।
আলবেনিজ বলেন, ‘হামাস নিন্দিত কাজ করেছেন, যা যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধও হতে পারে। তবে ইসরায়েল যা করেছে তা কিছুতেই সমর্থন করা যায় না’।