কেনিয়ায় বিরোধীদলীয় নেতা রাইলা ওডিঙ্গার অনানুষ্ঠানিক শপথ অনুষ্ঠানের প্রচার পরিকল্পনার কারণে দেশটির সবচেয়ে বড় তিনটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল সম্প্রচারের ওপর সরকারের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করেছে হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার সকালে ওই শপথ অনুষ্ঠানের আগেই কেটিএন, এনটিভি এবং সিটিজেন টিভির সম্প্রচার নিষিদ্ধ করা হয়। আদালত এ নিষেধাজ্ঞাই ১৪ দিনের জন্য স্থগিত করাসহ টিভি চ্যানেলগুলোর কার্যক্রমে রাষ্ট্রকে হস্তক্ষেপ না করার নির্দেশ দিয়েছে।
তবে টিভি স্টেশনগুলোর সম্প্রচার এখনো বন্ধ আছে এবং সরকার আদালতের আদেশ মানার কোনো লক্ষণও দেখায়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বিরোধীদলীয় নেতা রাইলা ওডিঙ্গার অনানুষ্ঠানিক ‘শপথ’ অনুষ্ঠান সম্প্রচারের পরিকল্পনা করায় কেটিএন, এনটিভি এবং সিটিজেন টিভি বন্ধ করে দেওয়া হয়। ওডিঙ্গা গত বছরের নির্বাচনে হেরে গিয়েছিলেন। মঙ্গলবার তার শপথ গ্রহণকে ব্যাপকভাবে প্রচারণা কৌশল হিসেবে দেখা হলেও কর্তৃপক্ষের অভিযোগ এটি রাষ্ট্রদ্রোহমূলক কর্মকাণ্ড। ওই অনুষ্ঠান সম্প্রচারের পরিকল্পনা করায় বন্ধ করে দেওয়া হয় তিন টিভি চ্যানেল। এ নিয়ে মামলার শুনানি চলছে।
বিষয়টি নিয়ে কেনিয়ার তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তিমন্ত্রী জোসেফ মুকেরুকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বিবিসি’কে বলেন, এটি নিরাপত্তার বিষয় এবং টিভি স্টেশনগুলো আবার কখন সম্প্রচার শুরু করতে পারবে সে প্রশ্নের উত্তর কেবল নিরাপত্তামন্ত্রীই দিতে পারবেন।
কেনিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ওডিঙ্গার অনুষ্ঠান প্রচার করাকে ‘সরকারকে উৎখাতের চেষ্টা’ অভিহিত করে বলেছেন, এর সম্প্রচার হাজার হাজার সাধারণ কেনীয়র মৃত্যু ডেকে আনবে।
তবে কেনিয়ার সাংবাদিকরা সরকারের টিভি চ্যানেল বন্ধের পদক্ষেপ ‘ন্যাক্কারজনক’ বলে এর সমালোচনা করেছে এবং সরকারকে ‘সংবিধানকে সম্মান জানানো’ এবং ‘সাংবাদিকদের নজিরবিহীন ভয়ভীতি প্রদর্শন’ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে।
ওদিকে, সাধারণ কেনীয়রাও তিনদিন ধরে টিভিতে সংবাদ এবং জনপ্রিয় অনুষ্ঠান দেখতে না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে এবং আদালতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াত্তা গতবছর অক্টোবরে পুনর্নির্বাচনে জিতে নভেম্বরে দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেন। ওই নির্বাচন বয়কট করেছিলেন বিরোধীদলীয় নেতা ওডিঙ্গা।
তবে সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে কেনিয়াত্তার প্রাথমিক জয় নাকচ করে।
ওদিকে, বিরোধীদল গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলী সম্পর্কে জনগণের তথ্য জানার অধিকার ক্ষুন্ন করার জন্য সরকারকে দোষারোপ করেছে।