একজন সিনিয়র পাকিস্তানি আমলা শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) অভিযোগ করেছেন যে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং প্রধান বিচারপতি সাম্প্রতিক নির্বাচনে ভোট কারচুপির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
এনডিটিভি জানিয়েছে, তিনি এই সমস্ত অন্যায়ের দায় নিয়ে তার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।
রাওয়ালপিন্ডি সাবেক কমিশনার লিয়াকত আলী চট্টার বক্তব্য হলো, কারাগারে বন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) গত ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কথিত কারচুপি এবং তার ম্যান্ডেট চুরির বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিক্ষোভ শুরু করার মধ্যে এসেছিল।
রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় লিয়াকত আলি চট্টা বলেন, যে প্রার্থীরা নির্বাচনে হেরেছে তাদের জেতানো হয়েছে।
ডন পত্রিকা জানিয়েছে, ‘আমি এই সমস্ত অন্যায়ের দায় নিচ্ছি এবং আপনাকে বলছি যে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং প্রধান বিচারপতিও এর সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে জড়িত। তাই লিয়াকত আলী চট্টা ভোটের ফলাফলে কারচুপির দায় স্বীকার করে তার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।’
লিয়াকত আলী চট্ট বলেছেন, ‘দেশের পিঠে ছুরি মেরে ঘুমানো যায় না। আমি যে অন্যায় করেছি তার শাস্তি আমার হওয়া উচিত এবং অন্য যারা এই অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত তাদেরও শাস্তি হওয়া উচিত।’
তিনি আরও বলেন, মানসিক চাপের কারণে তিনি আত্মহত্যার চিন্তা করেছিলেন। কিন্তু, পরে তিনি জনগণের সামনে বিষয়গুলো উপস্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেন।
তিনি বলেন, ‘সমস্ত আমলাতন্ত্রের কাছে আমার অনুরোধ, এই সমস্ত রাজনীতিবিদদের জন্য কোনও ভুল করবেন না।’
এদিকে, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে চট্টার অভিযোগ দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)।
একটি প্রেসবিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন দৃঢ়ভাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বা নির্বাচন কমিশনের উপর কমিশনার রাওয়ালপিন্ডির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে এবং নির্বাচন কমিশনের কোনও কর্মকর্তা নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তনের বিষয়ে কোনে নির্দেশনা জারি করেননি।’
তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছে ইসিপি।
এর আগে, লিয়াকত আলী চট্টার করা নির্বাচনী ফলাফলে কারচুপির দাবি প্রত্যাখ্যান করেন পাঞ্জাবের তত্ত্বাবধায়ক তথ্যমন্ত্রী আমির মীর।
জিও নিউজের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেন, ‘লিয়াকত আলী চট্টা ভোটের ফলাফলে কথিত কারচুপির কোনও প্রমাণ দেখাননি।’
কমিশনার ১৩ মার্চ অবসর নিচ্ছেন উল্লেখ করে মীর বলেন, ‘আমি মনে করি তিনি অবসর নেওয়ার পরে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করার চেষ্টা করছেন।’
এদিকে, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ ছাড়াও জমিয়ত উলেমা-ই-ইসলাম-ফজল (জেইউআই-এফ), গ্র্যান্ড ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (জিডিএ) এবং অন্যান্যরাও নির্বাচনের সময় কারচুপির অভিযোগ করেছে।