রাশিয়ার মস্কোর মোমবাতি জ্বালানো একটি গির্জায় শুক্রবার (১ মার্চ) দেশটির প্রয়াত বিরোধী নেতা আলেক্সি নাভালনির শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে।
শেষকৃত্যের সময় তার গির্জার চারপাশে নীরবে দাঁড়িয়েছিলেন তার হাজার হাজার শোকার্ত সমর্থক। তাদের গির্জার ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তারা বাইরে থেকেই শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
আর্কটিক কারাগারে মৃত্যুর দুই সপ্তাহ পর আলেক্সি নাভালনির পরিবার অবশেষে তাকে বিদায় জানাতে পারলো।
মস্কোর এক কোণে অসামান্য গম্বুজযুক্ত অর্থোডক্স গির্জাটির ভেতরে যাদের ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল তাদের মধ্যে আলেক্সি নাভালনির বাবা-মা অন্তর্ভুক্ত ছিল। নাভালনির এ সময় দেহ একটি কফিনের ভেতর ছিল।
তার সংক্ষিপ্ত অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শেষ হতেই গির্জাটি বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় অনেককে চিৎকার করে বলতে শোনা গেছে, ‘বন্ধ করবেন না, আমাকে বিদায় জানাতে দিন!’
গির্জার বাইরে প্রতিবাদী শোককারীদের অনেকে ফুল ধরে কেঁদেছেন। তাকে সমাহিত করার পর কিছু শোকার্তরা চিৎকার করে বলেন, ‘আমরা আপনাকে ভুলব না! আমাদের ক্ষমা করুন!’
ভিড়ের মধ্যে এক বয়স্ক লোক চিৎকার করে বলে উঠেন, ‘তিনি রাশিয়া সম্পর্কে সত্য কথা বলেছেন। ধন্যবাদ।’
আর্কটিক সার্কেলের একটি উচ্চ-নিরাপত্তা কারাগার নাভালনির মৃত্যু তার সমর্থকদের মধ্যে হতাশার জন্ম দিয়েছে, কারণ অনেক তরুণ রাশিয়ান আলেক্সি নাভালনিকে পরিবর্তনের জন্য তাদের সেরা নেতা হিসেবে মনোনীত করেছিল।
আনা নামের একজন শোকার্ত এএফপিকে বলেছেন, ‘তার মতো মানুষের মৃত্যু হওয়া উচিত নয়।’
শীতের কোট এবং টুপিতে ব্যস্ত ভিড়ের মধ্যে অনেকেই ছবি তোলার জন্য তাদের ফোন ধরেছিলেন। এই দৃশ্য আলেক্সি নাভালনি রাজধানীতে মাত্র এক দশক আগে সমাবেশের কথা মনে করিয়ে দেয়।
৩৭ বছর বয়সি ডাক্তার ম্যাক্সিম বলেন, ‘এটি কিছুটা ভীতিকর, কারণ আপনি জানেন না এর পরিণতি কী হবে। কিন্তু, আমি মনে করি এটি মানুষের জেগে ওঠার এবং নীরব না থাকার একটি উপায়।’
নাভালনির শেষকৃত্যের সময় গির্জা এবং বোরিসোভো কবরস্থানের চারপাশে কয়েক ডজন পুলিশ এবং অফিসারদের টহল দিতে দেখা যায়।
২২ বছর বয়সি প্রত্নতত্ত্ববিদ আলেনা বলেন, ‘মনে হয়েছে আমার হাজির থাকা উচিত। এটাও মনে হয়েছে যে, আমার এখানে থাকা দরকার। যদি আমি উপস্থিত না থাকতাম, তবে আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারতাম না।’
৬০ বছর বয়সি সাবেক আইনজীবী ইনেসা বলেন, ‘আমি এসেছি কারণ, তিনি ছিলেন একজন নায়ক, আমাদের জন্মভূমির শেষ নায়ক।’