পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ শুক্রবার (৫ এপ্রিল) বলেছেন, ‘পাকিস্তানে বসবাসকারী চীনা নাগরিকদের যখন নিরাপত্তা প্রোটোকল অনুসরণ করতে বলা হয়. তখন তারা বিরক্ত হয়।’
অশান্ত খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৫ চীনা প্রকৌশলী নিহত হওয়ার এক সপ্তাহ পর তিনি এমন মন্তব্য করলেন।
পাকিস্তানের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মেয়ে মরিয়ম একটি প্রদেশের প্রথম নারী মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম শীর্ষ কমিটির বৈঠকে বক্তব্য দেওয়ার সময় বলেন, ‘এখানে বসবাসকারী চীনারা নিরাপত্তা শৃঙ্খলা অনুসরণ করতে চায় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাদের নিরাপত্তা প্রোটোকল অনুসরণ করতে বলা হলে তারা বিরক্ত হয়। তারা কোন শৃঙ্খলার মধ্যে আসতে চায় না। কারণ, তারা এটি নিয়ে বিরক্ত।’
শীর্ষ কমিটির ওই বৈঠকে লাহোরের কর্পস কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল সৈয়দ আমের রাজা এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
তবে, মরিয়ম পাঞ্জাব প্রদেশে উন্নয়ন প্রকল্পে কাজ করা চীনা নাগরিকদের পরিপূর্ণ নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য তার সরকারের সংকল্প ব্যক্ত করেছেন। বৈঠকে বিশামে চীনা প্রকৌশলী হত্যার নিন্দা জানানো হয়।
গত সপ্তাহে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের দাসুতে ইসলামাবাদ এবং একটি জলবিদ্যুৎ বাঁধ নির্মাণ সাইটের মধ্যে ভ্রমণ করার সময় আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৫ চীনা প্রকৌশলী এবং তাদের পাকিস্তানি ড্রাইভার নিহত হন।
এ ছাড়াও শাংলা জেলার বিষম শহরে বাসে হামলা হয়েছে।
মরিয়ম বলেন, ‘সন্ত্রাস কঠিন যুদ্ধে রূপ নিয়েছে। সন্ত্রাসীরা ডিজিটালাইজড হয়ে গেছে এবং এই ধরনের প্ল্যাটফর্মে আমাদের তাদের থেকে এগিয়ে থাকা দরকার। এ ছাড়া সন্ত্রাসীদের কাছে সর্বাধুনিক অস্ত্র ও প্রযুক্তি রয়েছে। তাদের কাছে মার্কিন অস্ত্র রয়েছে, যা তারা আফগানিস্তানে পেয়েছে। আফগানিস্তান থেকে আসা অস্ত্র আইন প্রয়োগকারী সংস্থার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।’
৫০ বছর বয়সি পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ পার্টির এই নেতা বলেন, ‘যুবকদেরও মগজ ধোলাই করা হচ্ছে এবং সন্ত্রাসবাদীদের দ্বারা নিয়োগ করা হচ্ছে। আর সোশ্যাল মিডিয়া এই উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা অন্যতম প্রধান হাতিয়ার।’
এদিকে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ শুক্রবার দেশের বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করা চীনা নাগরিকদের জন্য নির্ভুল নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সমস্ত নিরাপত্তা সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এক বিবৃতিতে শাহবাজ বলেছেন, তিনি দেশের সার্বিক নিরাপত্তা, বিশেষ করে চীনা নাগরিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে ব্যক্তিগতভাবে বৈঠকগুলো পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
শরীফ বলেন, ‘দেশ থেকে সন্ত্রাসবাদের সম্পূর্ণ নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলবে।’