দূরে বসে কাটালুনিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে পারবেন না কার্লেস পুজদেমন৷ এ নিষেধাজ্ঞা স্পেনের সাংবিধানিক আদালতের। এদিকে দেশে পা দিলেই গ্রেফতার হতে পারেন পুজদেমন৷
শনিবারের এ রায়ের মধ্য দিয়ে একরকম জয় হলো স্প্যানিশ সরকারের৷ তাদের আর্জি ছিল যেন কোনোভাবেই কাটালুনিয়ার আঞ্চলিক পার্লামেন্ট পুজদেমনকে প্রেসিডেন্ট মনোনীত করতে না পারে৷
গেল ডিসেম্বরে সরকারের ডাকা রাজ্যটির নির্বাচনে স্বাধীনতাকামী দলগুলো সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে৷
কাটালুনিয়া পার্লামেন্টের নতুন স্পিকার রজার টরেন্ট এরই মধ্যে পুজদেমনের নাম প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রস্তাব রেখেছেন৷ এমনকি তিনি ব্রাসেলসে গিয়ে পদচ্যুত এই নেতার সঙ্গে দেখাও করে এসেছেন৷
আদালতের রায় বলছে যে, সরকার গঠন করতে হলে বার্সেলোনায় আগামী মঙ্গলবারের শপথ অনুষ্ঠানে পুজদেমনকে সশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে, এবং সেজন্য একজন বিচারকের অনুমতিও নিতে হবে৷ অন্যথায় এই সেশন বাতিল বলে গণ্য হবে৷
শনিবার ১১ জন ম্যাজিস্ট্রেটের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে আরো বলা হয়, কোনো বিচারকের অনুমতি ছাড়া প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হতে পারবেন না পুজদেমন৷
গত অক্টোবরে পুজদেমন ও তার প্রাক্তন মন্ত্রিসভার চার সদস্য বেলজিয়ামে পালিয়ে যান৷ স্পেনে তার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহ, অর্থ কেলেঙ্কারিসহ একাধিক মামলা চলছে, যেগুলোর ন্যায়বিচার পাবেন না বলে দাবি করে বেলজিয়াম চলে যান তিনি৷ তখন থেকেই সেখানে আছেন৷ তবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি ফেরার চেষ্টা করতে পারেন৷
পুজদেমন ও তার সতীর্থরা আশা করেছিলেন যে, ভিডিও কনফারেন্স বা প্রক্সি কাউকে শপথ অনুষ্ঠানে পাঠিয়ে কাজ চালিয়ে নেবেন৷ কিন্তু আদালতের এ সিদ্ধান্তে সেই আশায় গুড়ে বালি৷
কাটালুনিয়ার একমাত্র প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী পুজদেমন দেশে ফিরতে চাইলে তা সহজ হবে না৷
একেই গত বছর কাটালুনিয়ার স্বাধীনতা চেয়ে অবৈধ গণভোট করায় তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদোহ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে৷
আদালতে স্পেন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, একজন পলাতক আসামী একটি রাজ্য সরকারের প্রধান হতে পারেন না৷
শুক্রবার দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী মারিয়া সোরায়া সায়েন্থ সান্তা মারিয়া বলেন, ‘‘স্বাধীনভাবে চলাফেরা করার অধিকার তিনি হারিয়েছেন৷ স্পেনে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে তাকে গ্রেফতার করা হবে৷''
একই কথা বলেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও৷
সব মিলিয়ে নির্বাচনের পর পুজদেমনের মনে যে আশার আলো জেগেছিল, এই রায়ের পর তা অনেকটাই নিভে গেল৷