আবগারি নীতি সংক্রান্ত মামলায় গ্রেফতার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের জামিন আবেদনের শুনানিতে ইডির প্রতি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধানের দায়ের করা মামলা কোনও সাধারণ মামলা নয় বলে মঙ্গলবারের (৭ মে) শুনানিতে মন্তব্য করেছেন বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ।
এই বেঞ্চ ইডিকে বলেছেন, ‘অধিকার থেকে কাউকে আপনি বঞ্চিত করতে পারেন না।’
শীর্ষ আদালত আরও বলেছেন, ‘কেজরিওয়াল একজন মুখ্যমন্ত্রী। তবে, যদি কেজরিওয়ালের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করা হয়, তা হলেও তিনি কোনো সরকারি ফাইলে সই করতে পারবেন না।’
প্রসঙ্গত, গত ২১ মার্চ দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হন কেজরিওয়াল। তারপর থেকে তিনি জেলবন্দি রয়েছেন। তার গ্রেফতারকে বেআইনি দাবি করে প্রথমে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তার আইনজীবীরা।
কিন্তু, দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি স্বর্ণকান্তা শর্মা চলতি মাসের শেষ দিকে সেই আবেদন খারিজ করে দেওয়ায় শীর্ষ আদালতের শরণাপন্ন হন আপ প্রধান।
গত শুনানিতে বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ মন্তব্য করেছিল যে, ‘লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে কেজরিওয়ালকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।’
আদালত আরও মন্তব্য করেছিল, ‘গ্রেফতারের বিরুদ্ধে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর আবেদনের শুনানির জন্য সময় লাগতে পারে।’
তাই আদালত অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের কথা ভাবতে পারে। তারপর থেকেই কেজরিওয়ালের জামিন নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়।
মঙ্গলবার শুনানির সময় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর জামিনের প্রসঙ্গ তুলে কেজরিওয়ালের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘লোকসভা নির্বাচনে অংশ নেওয়া কেজরিওয়ালের মুক্তি গণতান্ত্রিক অধিকারের মধ্যে পড়ে।’
বিচারপতি খান্নার বেঞ্চ তখন জানায়, তারা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের আবেদন শুনবেন। কারণ, কেজরিওয়াল একজন জনপ্রতিনিধি। নির্বাচনে জিতেছেন। নির্বাচনে প্রচারের প্রয়োজন রয়েছে তার।
তখন কেজরিওয়ালের জামিনের বিরোধিতা করে ইডি আদালতে জানায়, ‘ফৌজদারি মামলায় গ্রেফতার কেজরিওয়ালকে জামিন দিলে মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে। তদন্তের স্বার্থে ছয় মাসে তাকে নয়বার সমন পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু, তিনি একবারও হাজিরা দেননি।’
তখন সুপ্রিম কোর্ট বলেন, ‘দেশে সাধারণ নির্বাচন হচ্ছে, আমরা কখনই তা উপেক্ষা করতে পারি না।’