কানাডার সংসদ সদস্যদের জাতীয় নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, কানাডার গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান এবং প্রক্রিয়ার জন্য দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিদেশি হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে ভারত।
হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, এর আগে এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে ছিল রাশিয়া। আর এখন রাশিয়া তৃতীয় স্থানে চলে গেছে এবং দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে ভারত।
এদিকে কয়েক মাস আগে কানাডিয়ার গোয়েন্দা সংস্থাে একটি তদন্ত রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিলে যে, সে দেশের গত দুটি নির্বাচন প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছিল চীন। যে কারণে বিদেশি হুমকি হিসাবে চীনের নাম তালিকার শীর্ষ স্থানে রেখেছিল কানাডা।
ওই দুই নির্বাচনেই সেদেশে জয়ী হয়েছিলেন কানাডার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
অন্যদিকে, সম্প্রতি দেশটির গএয়ন্দা সংস্থার একাধিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে, কানাডার নির্বাচনে ভারত এবং পাকিস্তানও নাক গলিয়ে থাকতে পারে।
তবে কানাডার সংবাদমাধ্যম গ্লোব অ্যান্ড মেইলের বর্ষীয়ান সাংবাদিক স্টিভেন চেজ এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে দাবি করেছেন, ২০২১ সালের ভোটে বিদেশি প্রভাব নিয়ে তদন্ত করা সংসদীয় কমিটিকে ভারতের সংশ্লিষ্ট থাকার কোনো তথ্য দেয়নি তদন্তকারীরা।
প্রসঙ্গত, গত ২০২৩ সালের জুন মাসে কানাডার ভ্যানকুভারে বসবাসরত খলিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর খুন হয়েছিলেন। সেই ঘটনার পর বেশ কয়েকদিন পর জি-২০ বৈঠকে অংশ নিতে ভারতে এসেছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
সেই সময় ভারতের মাটিতে দাঁড়িয়েই খলিস্তানি আন্দোলনকে পরোক্ষভাবে সমর্থন করে যান তিনি। এরপরই কানাডার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকে।
এই অবস্থার মধ্যেই কানাডার পক্ষ থেকে ভারতীয় হাইকমিশনের এক কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করা হয়। জবাবে ভারতও কানাডার হাইকমিশনের এক কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করে।
পরে ভারতের নিযুক্ত কানাডার ৪১ জন কূটনীতিককে দেশ ছাড়তে বলেছিল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অবশেষে ভারতের দাবি মেনে কূটনীতিকদের ভারত থেকে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছিল কানাডা।
উল্লেখ্য, কানাডায় বেড়ে চলা ভারতবিরোধী আন্দোলন নিয়ে একাধিকবার জাস্টিন ট্রুডোর সরকারের সঙ্গে কথা বলেছে দিল্লি। তবে বাকস্বাধীনতার নামে খলিস্তানিদের থামানোর চেষ্টা করেননি ট্রুডো।
এমমকী ইন্দিরা গান্ধীর হত্যার দৃশ্যের ট্যাবলো আকারে প্রদর্শন করে চালানো হয়েছে সেখানকার রাস্তায়। এরপরও চুপ থেকেছে কানাডার জাস্টিন ট্রুডো সরকার।
এরই মাঝে কানাডার মাটিতে ভারতীয় পতাকার চরম অপমানও করা হয়। কানাডা সরকার উল্টো নিজের দেশের নাগরিকদের উদ্দেশে নির্দেশিকা জারি করে জানায়, ভারতে গেলে হেনস্থান শিকার হতে পারেন তারা।
এই পরিস্থিতিতে কানাডার নাগরিকদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দেয় ভারত। পরে অবশ্য ফের সেই পরিষেবা চালু হয়।