টানা তৃতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণ করেছেন নরেন্দ্র মোদি। গতবারের মতো এবারও বর্ণহিন্দুদের মোদির মন্ত্রিসভায় প্রাধান্য দেখা গেছে। এবার ৭২ জন মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে দলিত থেকে ১০ জন এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বী থেকে ৫ জন শপথ নিয়েছেন। এদের ২ জন শিখ, ২ জন বৌদ্ধ এবং একজন খ্রিস্টান।
রোববার (৯ জুন) ভারতের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটের কিছু পরে নয়াদিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান শুরু হয়। তবে নির্ধারিত সময়ের আগেই নরেন্দ্র মোদিসহ অন্যান্যরা রাষ্ট্রপতি ভবন প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন।
এসময় সেখানে সাতটি দেশের রাষ্ট্রপতি বা সরকার প্রধানরাও উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া দেশি-বিদেশি আট হাজার অতিথি শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে শপথ বাক্য পাঠ করান সে দেশের রাষ্ট্রপতি দৌপদী মূর্মূ। এরপর একে একে মন্ত্রী, স্বতন্ত্র মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীসহ মোট ৭১ জন শপথ গ্রহণ করেন। এর মধ্যে মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন ৩০ জন, প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন ৩৬ জন, স্বতন্ত্র মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন আরো ৫ জন।
এর মধ্যে নারী রয়েছেন ৭ জন, অন্যান্য সংখ্যালঘু ৫ জন। কিন্তু এর মধ্যে একজনও ইসলাম ধর্মাবলম্বী নেই।
শপথ গ্রহণকারীদের মধ্যে ১০ জন দলিত, পিছিয়েপড়া অনগ্রসর হিন্দুর ২৭ জন, বিভিন্ন ধর্মীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠী থেকে ৫ জন এবং ৫ জন উপজাতির প্রতিনিধি রয়েছেন। ২১ জন রয়েছেন উচ্চবর্ণের হিন্দু।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এনডিএ জোটের শরিক বিজেপি দল থেকে কেরালার মাল্লাপুরম থেকে আব্দুস সালাম নামে ইসলাম ধর্মাবলম্বীর একজনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। তবে তিনি বিজয়ী হতে পারেননি। এছাড়া বিহারে নীতিশ কুমারে দল জেডি (ইউ) থেকে কিষাণগঞ্জে ইসলাম ধর্মাবলম্বীর একজনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। তিনিও পরাজিত হন।
জানা গেছে, মোদির এবারের মন্ত্রিসভায় ২৪টি রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে জাত ও পাতের বিচারে। এর মধ্যে অনগ্রসর গোষ্ঠীর ২৭ জন, তফশিলি জনগোষ্ঠীর ৫ জন এবং তফশিলি উপজাতির রয়েছেন ১০ জন এবং বর্ণহিন্দু থেকে প্রতিনিধিত্ব করছেন ২১ জন।
২০১৯ সালের এনডিএ’র মন্ত্রিসভায় মোট মন্ত্রী ছিলেন ৫৭ জন। এর মধ্যে উচ্চবর্ণের মন্ত্রী ছিলেন ৩২ জন। অনগ্রসর (ওবিসি) গোষ্ঠীর মন্ত্রী হিসেবে ছিলেন ১৩ জন, অন্যান্য অনগ্রসর উপজাতি থেকে মন্ত্রী ছিলেন ৬ জন।
এরপর ২০২১ সালে মন্ত্রিসভার আকার আরো বড় করা হয়। এতে অনগ্রসর হিন্দুদের মধ্য থেকে অংশগ্রহণ বেড়ে হয় ২৭ জনে। তপশিলি গোষ্ঠী থেকে ১২ জন এবং অন্যান্য অনগ্রসর উপজাতি মন্ত্রিত্ব দেওয়া হয় ৮ জনকে। সেইসঙ্গে বর্ণহিন্দু থেকে মন্ত্রী হন ৩০ জন।
২০১৯ সালের মন্ত্রিসভায় সংখ্যালঘুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হয়েছিলেন বিজেপি থেকে নির্বাচিত মুখতার আব্বাস নাকভী। ২০২২ সালে তার রাজসভার সময়সীমা শেষ হয়ে যায়। এরপর স্মৃতি ইরানি তার স্থলাভিষিক্ত হন।
এবার ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিসেবে মোট ৫ জন মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। তারা হলেন- হরদ্বীপ সিং পুরি, রভনীত সিং বিট্টু, জর্জ কুরিয়ান, কিরেন রাজিজু এবং রামদাস আথাওয়ালে।
এর মধ্যে পুরি এবং আথাওয়ালে রাজসভার সদস্য। রাজিজু অরুণাচল প্রদেশ থেকে বিজয়ী হন এবং বিট্টু পাঞ্জাব থেকে নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হতে পারেননি।